চলছে বাদ্যযন্ত্র তৈরি। নিজস্ব চিত্র
তাঁদের ব্যবসা মূলত পাঁচ মাসের। তবে সব থেকে বেশি ব্যবসা হয় চৈত্র থেকে জৈষ্ঠ্য, এই তিন মাস। কিন্তু এ বছর করোনা ও লকডাউন-পরিস্থিতি সব ওলটপালট করে দিয়েছে, জানান কাঁকসার খোল, ঢোল, ঢাক প্রস্তুতকারকেরা। তাঁরা জানান, করোনা-সতর্কতায় প্রায় প্রতিটি গ্রামেই গাজন ও ‘চব্বিশ প্রহর’ বন্ধ করা হয়েছে। ফলে, তাঁদের রুজিতে সমস্যা তৈরি হয়েছে।
কাঁকসার রক্ষিতপুর, গোপালপুর-সহ নানা গ্রামে গাজন হয়। আবার চব্বিশ প্রহরের আয়োজন হয় সুন্দিয়ারা, ত্রিলোকচন্দ্রপুর, দোমড়া, তেলিপাড়া-সহ নানা গ্রামে। কাঁকসার কয়েকটি পরিবার বাদ্যযন্ত্র প্রস্তুত করে। তাঁরা জানান, প্রতি বছর এই মরসুমে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার কাজ করেন তাঁরা। বাদ্যযন্ত্র প্রস্তুতকারকেরা জানান, গ্রামে-গ্রামে এই সময়ে হরিনাম সংকীর্তন হয়। ফলে, গ্রামের অনেকেই খোল কিনে নিয়ে যান। এক-একটি খোলের দাম পড়ে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা। এই উপার্জনই তাঁদের বছরের ভরসা। কিন্তু বদন রুইদাস নামে এক জন বলেন, ‘‘করোনা শুধু মানুষের প্রাণ কাড়ছে না। আমাদের ভাতও কাড়ছে। আমার গোটা পরিবার এই কাজের সঙ্গে যুক্ত।’’ বদনবাবুরা জানান, কাঁকসা, দুর্গাপুরের কিছু গ্রাম, আউশগ্রাম থেকে অনেকে তাঁদের কাছে বাদ্যযন্ত্র তৈরি করাতে আসেন। কিন্তু এ বার এক জনও আসেননি।
একই কথা বলেছেন কাঁকসার পানাগড়ের গৌর রুইদাসও। তিনি জানান, এই সময়ে কাজের চাপে খাওয়ার সময় থাকে না। কিন্তু এ বছর কোনও কাজ হল না। তিনি বলেন, ‘‘এখন মনে হচ্ছে অন্য কোনও পেশায় যেতে হবে।’’ এই পরিস্থিতিতে কবে সব কিছু ঠিক হয়, সে দিকে তাকিয়ে ছাড়া উপায় নেই, জানান দোমড়া গ্রামের বাদ্যযন্ত্রের দোকানদার শ্রীমন্ত রুইদাস।
বিডিও (কাঁকসা) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এখন সবাই সমস্যায় আছেন। তবে তবে বাদ্যযন্ত্র প্রস্তুতকারকেরা কোনও সাহায্যের জন্য আবেদন করেননি। আবেদন করলে খতিয়ে দেখা হবে।’’