দেওয়া হল খাদ্যসামগ্রী। রবিবার বৈদ্যনাথপুরে। নিজস্ব চিত্র
প্রতি বছরই বাবার বার্ষিক শ্রাদ্ধ উপলক্ষে বহু অতিথিদের নিমন্ত্রণ জানান তিন ভাই। কিন্তু এ বার তার বদলে করোনা-পরিস্থিতির জেরে অন্তত ১৬০টি পরিবারের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিলেন পাণ্ডবেশ্বর ব্লকের বৈদ্যনাথপুরের তিন ভাই। পাশাপাশি, আরও প্রায় ৪৬০ জনকে তাঁদের বাড়ির সামনে নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড় করিয়ে খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট দেওয়া হয় বলে পরিবার জানিয়েছে।
তিন ভাইয়ের মধ্য বড় দিলীপ ধীবর মাছের ব্যবসা করেন। মেজো ভাই সাগরবাবুর মুদির দোকান রয়েছে। ছোট ভাই যমুনাবাবু স্থানীয় বৈদ্যপুর পঞ্চায়েতের সদস্য। তাঁরা জানান, ২০১২-র ৫ এপ্রিল তাঁদের বাবা নির্মলবাবু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন। তার পরে প্রতি বছর বাবার স্মৃতিতে বার্ষিক শ্রাদ্ধানুষ্ঠান আয়োজন করেন তাঁরা। যমুনাবাবু বলেন, ‘‘অন্তত সাতশো জন নিমন্ত্রিত থাকেন। এ বার জমায়েত এড়াতে বাড়ি-বাড়ি পাঁচ কেজি করে চাল, পাঁচশো গ্রাম মসুর ডাল, আড়াইশো মিলিলিটার সর্ষে তেল, চারশো গ্রাম পেঁয়াজ, দু’কেজি আলু, মশলা, একটি করে সাবান ও ‘মাস্ক’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’’ পাণ্ডবেশ্বর নামোপাড়ার বাবলু বাউড়ি, বাপি বাউড়ি প্রমুখ বলেন, ‘‘এমন কাজ যদি সবাই করেন, তা হলে ‘লকডাউন’-এর সার্থকতা বোঝা যাবে।”
পাশাপাশি, আরও যে প্রায় ৪৬০ জন আত্মীয় এসেছিলেন বৈদ্যনাথপুরে, তাঁরাও পরস্পরের থেকে অন্তত ছ’ফুট দূরত্বে দাঁড়িয়ে থেকে খাদ্যসামগ্রী নেন।
তিন ভাইয়ের এই কাজকে স্বাগত জানিয়েছেন বৈদ্যনাথপুর পঞ্চায়েতের প্রধান জবা সাহা, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি (পাণ্ডবেশ্বর) নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী প্রমুখ। বিডিও (পাণ্ডবেশ্বর) কৌশিক সমাদ্দার বলেন, ‘‘বিধি মেনেই খাদ্যসামগ্রী বিলি করা হয়েছে। সবার কাছে আর্জি, এ ভাবেই সবাই এগিয়ে আসুন।’’