তৈরি ওয়াটার এটিএম। নিজস্ব চিত্র
শহরের বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষের জন্য জলের এটিএম (ওয়াটার এটিএম) বসানোর উদ্যোগ বাস্তবায়নের পথে। সেগুলি থেকে এক টাকায় এক লিটার বিশুদ্ধ পানীয় জল মিলবে। দুর্গাপুরের ১৫টি জনবহুল জায়গায় এই রকম এটিএম নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের মুখে। দ্রুত সেগুলি চালু করা হবে বলে জানান পুরসভার জল দফতরের মেয়র পারিষদ পবিত্র চট্টোপাধ্যায়।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যাঙ্কের এটিএমে যেমন কার্ড দিয়ে টাকা তোলা যায়, ওয়াটার এটিএমে এক টাকার কয়েনের বিনিময়ে পাওয়া যাবে এক লিটার জলের পাউচ। এই ধরনের ভেন্ডিং মেশিনের মাধ্যমে পানীয় জলের ব্যবস্থা ইতিমধ্যে চালু হয়েছে দেশের বিভিন্ন বড় শহরে। এ রাজ্যে হলদিয়ায় ২০১৭ সালে ‘ওয়াটার এটিএম’ চালু হয়। রাস্তায় বেরিয়ে প্রয়োজন হলে অনেকেই বেশি দামের পানীয় জলের বোতল কিনতে বাধ্য হন। অনেকের পক্ষে তা সম্ভব হয় না। মূলত তাঁদের কথা মাথায় রেখেই এই জলের এটিএম গড়া হচ্ছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আগের পুরবোর্ড শহরের আট জায়গায় ‘ওয়াটার এটিএম’ চালুর পরিকল্পনা করেছিল। নতুন বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরে তা বাড়িয়ে ১৫টি করার সিদ্ধান্ত নেয়। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল, দুর্গাপুর ইএসআই হাসপাতাল, ডিএসপি মেন হাসপাতাল, নানা বাজার এলাকা, বাসস্ট্যান্ড, স্টেশন প্রভৃতি জায়গায় এটিএম তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। কয়েকটির কাজ প্রায় শেষ। এক-একটির জন্য গড়ে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা করে খরচ হচ্ছে। ‘গ্রিন সিটি’ প্রকল্পের টাকায় এই কাজ হচ্ছে বলে পুরসভা জানিয়েছে।
মেয়র পারিষদ পবিত্রবাবু জানান, পুরসভা যে সব এলাকায় জল সরবরাহ করে, সেখানকার এটিএমগুলিতে পুরসভা জল সরবরাহ করবে। ডিএসপি টাউনশিপের ক্ষেত্রে জল সরবরাহ করবেন ডিএসপি কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিদিন বহু মানুষ নানা কাজে বাইরে বেরোন। তাঁদের অনেকের পক্ষেই দোকান থেকে পানীয় জলের বোতল কেনা সম্ভব হয় না। ওয়াটার এটিএম চালু হয়ে গেলে তাঁদের সুবিধা হবে। মাত্র এক টাকার বিনিময়ে তৃষ্ণা মেটাতে পারবেন তাঁরা।’’
এর আগে গরমে পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ট্যাপ কলের ব্যবস্থা করেছিল বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা। কিন্তু দেখা গিয়েছে, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেগুলি কিছু দিনের মধ্যেই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গিয়েছে। তবে গঠনগত কারণে ওয়াটার এটিএমের হাল তেমন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন কর্তারা।
ওয়াটার এটিএম থেকে জল নিয়ে খোলা বাজারে তা বেশি দামে বিক্রির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকে। সেক্ষেত্রে পুরসভার উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সব ক’টি এটিএমের উপরে কী ভাবে নজরদারি চালানো যায়, সে নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।