(বাঁ দিকে) ক্ষতিগ্রস্থ পুলিশের গাড়ি। ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
ফের ছেলেধরা গুজব। এ বার আসানসোলে। এর জেরে উত্তেজনা ছড়াল আসানসোল উত্তর থানা এলাকায়। অভিযোগ, উত্তেজনা থামাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাদের লক্ষ্য করে ব্যাপক ইটবৃষ্টি করেন স্থানীয়েরা। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়িও। এই ঘটনায় এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার আহত হয়েছেন। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আসানসোলের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে ৯টা নাগাদ আসানসোল উত্তর থানার ব্লু ফ্যাক্টরি সংলগ্ন ভানোড়া খোলামুখ কয়লাখনি এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ডিসি (সেন্ট্রাল) ধ্রুব দাসের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ডিসি পরে বলেন, “শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ আমাদের বাহিনী একটি বিক্ষোভ চলছে বলে জানতে পারে। সেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু করেন স্থানীয়েরা। ভাঙচুর করা পুলিশের কয়েকটি গাড়িতেও। এক সিভিক ভলান্টিয়ার গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আরও কয়েক জন পুলিশকর্মী সামান্য আহত হয়েছেন। আমরা ইতিমধ্যেই কয়েক জনকে আটক করেছি। পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।”
স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা স্থানীয় কাউন্সিলর উৎপল সিংহ বলেন, “ছেলেধরা গ্রামে এসেছে এই ধরনের গুজব রাত ৯টা নাগাদ রটে যায়। আশেপাশে চার-পাঁচটা আদিবাসী গ্রাম রয়েছে। পুলিশ পৌঁছতেই তাঁরা ঘাবড়ে যায়। নিজেদের মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বিক্ষোভ শুরু হয় সঙ্গে বচসা ও বাকবিতণ্ডা হয়। যা হয়েছে ভুল বোঝাবুঝির ফলেই হয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।”
রাজ্য জুড়ে ছেলেধরা গুজব বেড়েই চলেছে। ১১ জুলাই ভাঙড়ে বোনের জন্য পাত্র দেখতে গিয়ে ছেলেধরা সন্দেহে এক যুবককে মারধর করা হয় বলো অভিযোগ। তার আগের দিন বসিরহাটে এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়া হয়। ৮ জুলাই কাঁধে বস্তা দেখে খুঁটিতে বেঁধে রেখে মারধর করার অভিযোগও সামনে এসেছে। পুলিশ-প্রশাসন গুজব ছড়ানো রুখতে যথাযথ প্রচেষ্টা করলেও তা থামার কোনও লক্ষণ নেই।