রায়না গুলি কান্ড নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে বাধল ঝামেলা। প্রতীকী ছবি।
প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর বাবার উপরে গুলি চালানোরঘটনায় অভিযুক্তদের এক জন দলের রায়না ১ ব্লক কমিটির সদস্য। তাঁর নাম কী ভাবে ব্লক কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হল, সে নিয়ে তেতে উঠল তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির বৈঠক। রবিবার বিকেলে বর্ধমানের টাউন হলে সে পরিস্থিতির সামাল দিয়ে জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, যা সমস্যা রয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে তা মিটিয়ে ফেলতে হবে।
বুধবার রাতে রায়নার নতু পঞ্চায়েতের সুকুর গ্রামে গুলিতেজখম হন তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য মৃগাঙ্ক সিংহ ও তাঁর বাবা বাদল সিংহ। এই ঘটনায় গ্রামেরই তিনজনের নামে অভিযোগ হয়। তাঁদের মধ্যে তরুণ রায় ও হেমন্ত মাঝিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। অধরা রয়েছেন অসামরিক বাহিনীর প্রাক্তন জওয়ান সৌমেন রায়। তৃণমূলের দাবি, দলের সদ্য গঠিত ব্লক কমিটির তালিকায় সৌমেনের নাম রয়েছে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন জেলা কমিটির বৈঠকে প্রতিটি ব্লকের সভাপতি ও বিধায়কদের পঞ্চায়েত ভোটের আগে সংগঠনের পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলেন জেলা সভাপতি। মেমারির দু’টি ব্লকে সংগঠনের হাল নিয়ে নেতৃত্ব খুশিনন, তা স্পষ্ট করে দেন। তার পরেই রায়না ১ ব্লকে সংগঠনের অন্দরে‘দ্বন্দ্ব’ ও গুলি চালানোর মতো ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
বৈঠকে থাকা তৃণমূল নেতাদের একাংশের দাবি, সে নিয়ে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন রায়না ১ ব্লক সভাপতি বামদেব মণ্ডল ও বিধায়ক (রায়না) শম্পা ধাড়া। বিধায়কের দাবি, পারিবারিক বা গ্রামীণ বিবাদে অকারণে রাজনৈতিক রং লাগানো হচ্ছে। অভিযুক্তদের সমাজবিরোধী আখ্যা দেওয়া হয়েছে, যা ঠিক নয়। অভিযুক্তদের বিরোধী দলের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।বামদেব পাল্টা দাবি করেন, অভিযুক্তদের মধ্যে এক জনের নাম ব্লক কমিটিতে রয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, দলের লোক হলে কেউ প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যকে গুলি চালাতে পারে? তাঁর আরও অভিযোগ, ব্লক কমিটিতে সাত-আট জনের নাম রয়েছে, যাঁদের সঙ্গে বিধানসভা ভোটের সময়ে দলের যোগাযোগ ছিল না। বরং, তাঁরা বিরোধী দলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন।কী ভাবে তাঁরা ব্লক কমিটিতে ঢুকলেন, তা দেখা দরকার বলে জানান তিনি। বৈঠকে তিনি এমনও দাবি করেন, ব্লক কমিটিতে ওই সব লোকের নাম থাকায় দলের কর্মী-সমর্থকদের কাছে তাঁকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে।শম্পা পাল্টা জানান, ওই কমিটি যিনি তৈরি করেছেন, তাঁরাই এর জবাব দিতে পারবেন।
রায়না ১ ব্লকের দুই নেতার অডিয়ো-বার্তা (আনন্দবাজার সেটির সত্যতা যাচাই করেনি) সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় দল অস্বস্তিতে পড়েছে, এ দিন বৈঠকে নেতারা তা-ও জানিয়ে দিয়েছেন। বামদেব বা শম্পা বৈঠকের পরে বিষয়টি নিয়ে কোনও কথা বলতে রাজি হননি। তাঁরা বলেন, “যা বলার জেলা সভাপতি বলবেন।’’ জেলা সভাপতি শুধু বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের আগে কোন ব্লকে সাংগঠনিক শক্তি কেমন, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে সেটাই খোঁজ নেওয়া হয়েছে।’’