লকডাউন-চিত্র: পুলিশের জেরা। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
কেউ জানালেন গঙ্গাজল আনতে যাচ্ছেন, কেউ দাবি করলেন এটিএমে যাওয়ার দরকার পড়েছে। বুধবার রাজ্য সরকার ঘোষিত ‘লকডাউন’-এ পূর্ব বর্ধমানের রাস্তায় বেরনো মানুষজনকে আটকে এমন নানা কারণই শুনল পুলিশ। কিছু জায়গায় রাস্তার পাশে আড্ডাও দিতে দেখা যায় কয়েকজনকে। তবে পুলিশ আসতে দেখলেই ফাঁকা হয়ে গিয়েছে এলাকা।
বর্ধমান শহরে সাত দিনের ‘লকডাউন’ শেষ হয়েছে মঙ্গলবার। এই কয়েকদিনে বারবারই বাজারে ভিড় জমতে দেখা গিয়েছে। বুধবার সকালেও কিছু জায়গায় সেই ছবি দেখা যায়। শহরের তেঁতুলতলায় আনাজ ও মাছের বাজারে এ দিনও পসরা নিয়ে আসেন কিছু ব্যবসায়ী। কিছু ক্রেতাও ভিড় করেন। দূরত্ব-বিধি শিকেয় ওঠে বলে অভিযোগ। তবে বাজার বন্ধ হতেই শহরে কার্যত বন্ধের চেহারা ফিরে আসে। নবাবহাট, গোপালবাগ, স্টেশন চত্বর, কার্জন গেট, বীরহাটা, তেলিপুকুরে পুলিশ লোকজনকে আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। বেলার দিকে বিসি রোড, জিটি রোড প্রায় জনশূন্য ছিল।
মেমারিতেও রাস্তায় ছিল পুলিশ নাকা-তল্লাশি করে। অকারণে রাস্তায় বেরোনোর অভিযোগে লোকজনকে মেমারি বামুনপাড়া মোড়ে ওঠবস করানো হয়। কালনায় কিছু জায়গায় দল বেঁধে পুকুরপাড়ে মাছ ধরতে দেখা গিয়েছে। নানা ছুতোয় রাস্তা বেরনোর অভিযোগে অনেককে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় পুলিশ। পুলিশ আটকালে কেউ গঙ্গাজল আনতে যাচ্ছেন, কেউ ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন, আবার কেউ এটিএমে যাচ্ছেন বলে দাবি করেন। শহরে কিছু টোটোও রাস্তায় নামতে দেখা গিয়েছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশি সক্রিয়তা বাড়তেই ফাঁকা হয়েছে পথঘাট। কাটোয়াতেও সার্বিক ভাবে এ দিন এলাকা ফাঁকা ছিল। তবে কাটোয়া শহরের মাধবীতলা-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় লুকিয়ে দোকান চালানোর অভিযোগে পুলিশ কয়েকজনকে আটক করে।
‘লকডাউন’ না মানার অভিযোগে বুধবার ভাতারের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। দোকান খোলা ও রাস্তায় অকারণে ঘোরাঘুরি করার কারণে ভাতার বাজার, কাচগড়িয়া, বালসিডাঙা, কুবাজপুর থেকে কয়েকজনকে আটক করা হয়। পরে সতর্ক করে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
গ্রামীণ এলাকায় অবশ্য ‘লকডাউন’-এর মধ্যে চাষের কাজ চলেছে। আমন ধান পোঁতা, পাট শুকোনোর মতো কাজ করতে দেখা গিয়েছে চাষিদের।