Fire

আচমকাই আগুন ধরে যাচ্ছে ঘরে! রায়নায় ছড়াচ্ছে ‘ব্রহ্মশাপ’-এর গুজব, মানছে না বিজ্ঞান মঞ্চ

কী ঘটছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। সেই সুযোগে শুরু হয়ে গিয়েছে গুজব ছড়ানো। কারও মতে এর পিছনে ভগবানের অভিশাপ। কারও দাবি, এ সবই অলৌকিক! যদিও ভগবান বা অলৌকিকতায় বিশ্বাস নেই বিজ্ঞান মঞ্চের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়না শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৩ ২২:০৬
Share:

উঠোনে শুকোতে দেওয়া আছে পোড়া তোষক। — নিজস্ব চিত্র।

দৃশ্য এক, ঘরের দরজা, জানলা সব বন্ধ। আচমকা সেই ঘরে দাউদাউ করে জ্বলে উঠল বিছানা।

Advertisement

দৃশ্য দুই, বাড়ির বসার ঘরে কেউ নেই। হঠাৎ সেই ঘরের পর্দায় আগুন।

এমনই সব অদ্ভুতুড়ে ঘটনার সাক্ষী হচ্ছে পূর্ব বর্ধমানের রায়নার হাজরা পাড়া। কী হচ্ছে বোঝা না যাওয়ায় আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে আজগুবি সব দাবিদাওয়া। কেউ বলছেন অলৌকিক। কারও আবার মনে হচ্ছে ব্রহ্মশাপ নয় তো! বিজ্ঞান মঞ্চ অবশ্য ব্রহ্মশাপ বা অলৌকিকতার গপ্পকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছে।

Advertisement

রায়না বিধানসভার মাধবডিহি থানা এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম উচালন হাজরা পাড়া। সেই পাড়াতেই সপরিবার বাস রেণুকা হাজরার। তাঁর বাড়ি যেন একপ্রকার লণ্ডভণ্ড। বাড়ির উঠানে ফেলা রয়েছে আগুনে পোড়া তোষক। আধপোড়া চাদর, পর্দাও রোদে মেলে দেওয়া। কিন্তু কী ভাবে এ সব ঘটল? রেণুকা বলেন, ‘‘ছেলে কর্মসূত্রে বাইরে থাকে। পরিবার নিয়ে সবাই খুব আতঙ্কে আছি। সাত-আট দিন হল হঠাৎ করেই বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় ঘরের বিছানায়, পর্দায়, গোয়ালঘরে আগুন ধরে যাচ্ছে।’’ রেনুকা বলছেন, ‘‘এমন ঘটনা কখনও দিনের বেলা ঘটছে, আবার কখনও সন্ধ্যায়। শনিবার সকাল ৮টায় ও বেলা সাড়ে ১২ টায় দু’টি ঘরের বিছানায় আচমকাই আগুন লেগে যায়। কিন্তু কী ভাবে আগুন ধরছে সেটা আমারা কেউই কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। দরজা বন্ধ করে দিয়ে সবাই বাইরে বেরিয়ে যাবার পরেও ঘরের বিছানায় আগুন কী ভাবে ধরে যাচ্ছে সেটাই আমাদের আশ্চর্যজনক লাগছে।’’ গৃহবধূ সুপর্ণা হাজরা বলেন, ‘‘বাড়িতে বাচ্চা রয়েছে। ভয়ে, আতঙ্কে বাচ্চাকে এখন প্রতিবেশীর বাড়িতে রেখে আসি। ইলেকট্রিক মিস্ত্রীকে দিয়ে গোটা বাড়ির ইলেকট্রিক লাইন পরীক্ষা করানো হয়েছে। লাইনে কোনও সমস্যা নেই। তবুও হঠাৎ হঠাৎ ঘরে আগুন লেগে যাচ্ছে।’’ প্রতিবেশী পুষ্প হাজরা বলেন, “এমন ঘটনা সিনেমায় দেখেছি। গোয়েন্দা ও ভূতের গল্পের বইয়ে পড়েছি। আর এখন সেই সব বাস্তবে দেখতে পাচ্ছি!’’

কী ঘটছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। আর এই সুযোগে গুজব ছড়ানো শুরু হয়ে গিয়েছে এলাকায়। কারও মতে এর পিছনে রয়েছে ভগবানের অভিশাপ। আবার কারও দাবি, এ সবই অলৌকিক! যদিও ভগবান বা অলৌকিকতাকে স্রেফ বুজরুকি বলে মনে করে বিজ্ঞান মঞ্চ। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা সদস্য তাপস কার্ফা বলেন, “এ সবের পিছনে মোটেও কোনও অলৌকিকতা বা ভৌতিক ব্যাপার নেই। একই রকম ঘটনা কুসুমগ্রামেও ঘটেছিল। তখন বিজ্ঞান মঞ্চ ও পুলিশ যৌথ ভাবে তদন্ত চালিয়ে নিশ্চিত হয় পরিবারের মানসিক হতাশাগ্রস্ত এক সদস্য ওই কাণ্ড ঘটাচ্ছিলেন। এ ক্ষেত্রেও তেমন কিছুই হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement