প্রতীকী ছবি।
চতুর্থ শ্রেণির কর্মী পদে ১৩৫ জনকে নিয়োগ করা হবে বলে সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল দুর্গাপুর পুরসভা। এর জন্য প্রায় দেড় লক্ষেরও বেশি আবেদনপত্র জমা পড়েছে। অষ্টম শ্রেণির যোগ্যতামানের ওই পদের জন্য এমএ, এমএসসি, এমনকি গবেষক পড়ুয়ারাও আবেদনকারীর তালিকায় রয়েছেন বলে পুরসভা সূত্রের খবর। এই পরিসংখ্যান সামনে আসার পরেই রাজ্যের কর্মসংস্থানের চিত্র নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সাফাইকর্মী পদে লিখতে-পড়তে পারলেই দরখাস্ত করা যাবে। বাকি দশটি পদের জন্য অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ হতে হবে। পুরসভায় বিভিন্ন পদের জন্য আলাদা-আলাদা ‘ড্রপ বক্স’ রাখা হয়েছিল। ১৫ জানুয়ারি, আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। সেগুলি পরীক্ষা করা হচ্ছে। দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তি বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে দেড় লক্ষেরও বেশি আবেদন জমা পড়েছে। পুরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা আবেদনপত্র পরীক্ষার কাজ করছেন। জরুরি ভিত্তিতে কাজ চলছে। তাই রবিবার বা ছুটির দিনেও পালা করে কাজ করতে হচ্ছে কর্মীদের।’’
সূত্রের খবর, এই আবেদনকারীদের মধ্যেই রয়েছেন উচ্চ শিক্ষিতরা। তাঁদেরই একজন বলেন, ‘‘কী করব। নানা চাকরির পরীক্ষা দিচ্ছি। বেশ কয়েকটি চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া মাঝ পথে ঝুলে রয়েছে। তাই পরিবারের দিকে তাকিয়ে এই পদে আবেদন জানিয়েছি।’’ পাশাপাশি, বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরাও। সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকার, বিজেপি নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়েরা বলেন, ‘‘নানা চাকরির নিয়োগে দুর্নীতি, নতুন কর্ম সংস্থানের সুযোগ না হওয়ার কারণে এ রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীরা বিভ্রান্ত। হচ্ছে না নতুন শিল্পও। এই পরিসংখ্যানই সে কথা বলে দিচ্ছে।’’ যদিও তৃণমূল নেতা উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেকারদের জন্য রাজ্য সরকার যা পদক্ষেপ করেছে, তা আগে কখনও হয়নি।’’
এ দিকে, ওই পদগুলির নিয়োগ-নীতি কী হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলেই পুরসভার একটি সূত্রের দাবি। পুরসভায় কয়েকশো অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। রয়েছেন শহরাঞ্চলে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে যুক্ত কর্মীরাও। তাঁদের তরফে স্থায়ীকরণের দাবিতে বহুদিন ধরেই আন্দোলন চলছে। সম্প্রতি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারির পরে কয়েক দফা পুরসভায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁরা। আইএনটিইউসি প্রভাবিত ‘ডিএমসি ক্যাজুয়াল সাফাইকর্মী ইউনিয়ন’-এর সম্পাদক সুভাষ সাহা বলেন, ‘‘বছরের পর বছর কাজ করে চলেছেন সাফাইকর্মীরা। এখন তাঁদের বাদ দিয়ে বাইরের কাউকে স্থায়ী পদে নিয়োগের বিরুদ্ধে আমরা। আগে যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন, তাঁদের স্থায়ী করার ব্যবস্থা করতে হবে।’’
তবে এ বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য করেননি দিলীপবাবু। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘সরকারি নিয়ম মেনেই নিয়োগ হবে। যাঁরা পুরনো অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন, তাঁদের অনেকেরই যোগ্যতামান রয়েছে। সহানুভূতির সঙ্গে সব দিক খতিয়ে দেখেই নিয়োগ হবে।’’