ডিটিপিএস-এর সামনে চলছে গণ-অবস্থান। নিজস্ব চিত্র।
আগামী ৯ জানুয়ারি থেকে ডিভিসি-র দুর্গাপুর থার্মাল পাওয়ার স্টেশনের (ডিটিপিএস)-এর চতুর্থ ইউনিটে ফের উৎপাদন শুরু হতে পারে, এমনই আশা শ্রমিক সংগঠনগুলির। ডিভিসি-র সদস্য সচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে এমন ‘বার্তা’ মিলেছে বলে দাবি। তবে ফের যাতে উৎপাদন বন্ধ না হয়, তা নিশ্চিত করার দাবিতে বুধবার থেকে ডিটিপিএস-এর সামনে ধারাবাহিক গণ-অবস্থান শুরু করল আইএনটিটিইউসি ও তৃণমূল।
১৯৬৬-তে দুর্গাপুরের মায়াবাজারে ডিটিপিএস গড়ে তোলে ডিভিসি। একমাত্র ২১০ মেগাওয়াটের চতুর্থ ইউনিটটি চালু ছিল। পরিবেশ বিধি ভাঙার অভিযোগে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ২০২০-র ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়। অন্যথায় ইউনিট বন্ধের নির্দেশ দেয়। ডিটিপিএস কর্তৃপক্ষ অর্থাভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি জানিয়ে ৩১ ডিসেম্বর রাতে ইউনিটটি বন্ধ করে দেন।
অবিলম্বে চতুর্থ ইউনিট চালু করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। মঙ্গলবার কলকাতার ডিভিসি টাওয়ারে ডিভিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিক সংগঠনগুলির বৈঠক হয়। সেখানে কর্তৃপক্ষ তাঁদের এই আশ্বাস দিয়েছেন বলে দাবি শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের। বৈঠকে পঞ্চম ইউনিট নির্মাণের দাবিও জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ওই দিন ডিভিসি-র সদস্য সচিব পিকে মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অন্য আধিকারিকেরা শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে ডিভিসি মজদুর সঙ্ঘের সম্পাদক কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বৈঠকে কর্তৃপক্ষ ৯ জানুয়ারি থেকে ফের ইউনিট চালু করার আশ্বাস দিয়েছেন। বৈঠকে পঞ্চম ইউনিট নির্মাণের দাবিও জানানো হয়।’’ একই দাবি করেন সিটু নেতা অভিজিৎ রায় ও আইএনটিইউসি নেতা সুব্রত মিশ্র।
আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত ‘ডিভিসি কামগার সঙ্ঘ’, দুর্গাপুর মহকুমা কন্ট্রাক্টর ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন ও ডিটিপিএস কন্ট্রাক্টর শ্রমিক ইউনিয়ন এবং ৩৬ ও ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূলের উদ্যোগে বুধবার গণ-অবস্থান কর্মসূচি নেওয়া হয় ডিটিপিএসের সামনে। চতুর্থ ইউনিটের আধুনিকীকরণ, পঞ্চম ইউনিট স্থাপনের দাবিতে এই কর্মসূচি বলে জানান অবস্থানকারীরা। ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর স্বরূপ মণ্ডল বলেন, ‘‘চতুর্থ ইউনিট চালু হওয়ার পরে ফের বন্ধ করা যাবে না। ধারাবাহিক উৎপাদন চাই। এ ছাড়া, পঞ্চম ইউনিট গড়ার নিশ্চিত আশ্বাস চাই। যতক্ষণ তা না হচ্ছে আমাদের অবস্থান চলবে।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুর্গাপুরের ডিভিসি কর্তারা জানান, ওই বৈঠকে যা সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেই মতোই পদক্ষেপ করা হবে। তাঁদের আশা, ৮ জানুয়ারির মধ্যে দূষণ সংক্রান্ত ‘সাময়িক ছাড়’ দেবে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।