অশ্বত্থ পাতার প্রতিমা।
বহিরাগতদের পাশাপাশি কালনা শহরে সরস্বতী পুজোর মণ্ডপ সাজাতে এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় শিল্পীরাও। কোথাও নজরকাড়া প্রতিমা, কোথাও থিমের মণ্ডপে সেজে উঠছে শহর।
কিশোর সমিতি এবং কালনা মহিষমর্দিনীতলা অধিবাসীবৃন্দের মণ্ডপটি গড়ে তুলছেন কালনা ২ ব্লকের আনুখালের শিল্পী দেবাশিস ধারা। মণ্ডপ জুড়ে অসংখ্য হাতে আঁকা ছবি এবং মডেলের মাধ্যমে শিল্পী তুলে ধরেছেন সন্তানকে বড় করতে বাবাকে কতটা কঠোর পরিশ্রম এবং ত্যাগ করতে হয়। বহু ক্ষেত্রে সন্তান সফল হলেও বাবাকে একাই জীবন কাটাতে হয়, সেটাও দেখানো হয়। মণ্ডপে পা দিলে দেখা যাবে সেলাই মেশিন, ভ্যান, ঠেলাগাড়ি চালিয়ে বাবারা কেমন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেন। সেই টাকায় ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যত সুরক্ষিত হলেও তাঁরা থেকে যান আঁধারেই। মণ্ডপে ব্যবহার করা হয়েছে আঁকার খাতা, জামা-কাপড়, লাঙল, ঝুড়ি, কোদাল, ইট। শিল্পীর কথায়, ‘‘মণ্ডপে এলে ছোট থেকে বড় সকলের বাবাকে ভালবাসতে ইচ্ছা করবে। বাবা যে কত বড় মাথার ছাতা, তা মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।’’
লাল বাগানপাড়া জাগরণী সমিতির পুজোয় প্রতিবারই কিছু চমক থাকে। এ বার তাদের প্রতিমা তৈরি হচ্ছে প্রায় হাজার দশেক অশ্বত্থ পাতা পচিয়ে। প্রতিমাটি গড়ছেন শিল্পী প্রতীক কর্মকার। তিনি জানিয়েছেন, মূর্তিতে খুব কম রং ব্যবহার করা হচ্ছে। মূর্তির কিছু জায়গায় থাকবে কড়ি, সুপারি, দড়ির মতো জিনিস। দেবীর বাহন হাঁস তৈরি করা হয়েছে আইসক্রিমের চামচ দিয়ে।
বিশেষ এক কাপড় দিয়ে শহরের শিল্পী দিলীপ দত্ত টানা আড়াই মাস ধরে তৈরি করছেন নিউ নবীন সঙ্ঘের মূর্তি। তিনি বলেন, ‘‘গোটা মূর্তিটি তৈরি করতে প্রায় ৪০ মিটার কাপড় লাগছে। প্রতিমার শরীর, গয়না, মুকুট থেকে সব কিছু তৈরি হয়েছে বিশেষ এই কাপড় দিয়ে।পরিবেশ বান্ধব কাপড়ের তৈরি মূর্তিটির উচ্চতা
১২ ফুট। নতুন ধরনের প্রতিমার
টানে আশা করছি প্রচুর দর্শক আসবেন মণ্ডপে।’’