—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কিছু সরঞ্জাম বা উপকরণ চুরি করে এনে তবেই পুজো হয় আউশগ্রামের বামা কালীর। রামনগরের পান্ডুক এলাকার কালীপুজোর এটিই অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শতাধিক বছর আগে আউশগ্রামের পান্ডুকের ডাকাত সর্দার প্রহ্লাদ মেটে প্রতিষ্ঠা করেন এই দেবীকে। ডাকাতির অলঙ্কার দিয়েই তিনি সাজিয়েছিলেন দেবীকে। আজও পুরনো রীতি মেনে কিছু না সরঞ্জাম প্রতীকী অর্থে চুরি করে এনে পুজোর কাজে লাগানো হয়।
জনশ্রুতি, প্রহ্লাদ ডাকাত দলবল নিয়ে রণ-পা লাগিয়ে কেতুগ্রাম থানার মেটেলি গ্রামের কাছে একটি মন্দিরে বিগ্রহের স্বর্ণালঙ্কার ডাকাতি করতে যাচ্ছিলেন। পথে বীরভূমের মুলুকের কাছে বামাকালীর সাক্ষাৎ পান। তিনি দেবীকে কথা দেন, ডাকাতিতে সফল হলে তাঁকে নিয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠা করে পুজো করবেন। সেই মতো ডাকাতি করে ফেরার সময় ওই জায়গা থেকে দেবীর শিলামূর্তি তুলে এনে তিনি পান্ডুক গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন।
বর্তমানে সেই মূর্তিকে সারাবছর ধরে পুজো করা হলেও কালীপুজোর সময় মাটির প্রতিমা এনেই পুজো হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১৮ ফুট উচ্চতার ডাকের সাজের প্রতিমা তৈরি করা হয় এখানে। দেবীর বাম পা আগে থাকে বলে তিনি ‘বামা কালী’ নামে পরিচিত। কথিত, ডাকাতি করে ফিরে এসে কালীপুজোর পরদিন সকালে পুজো করেছিলেন প্রহ্লাদ। এখনও এখানে কালীপুজোর পরদিন সকালেই এই দেবীর পুজো হয়।
বর্তমানে এলাকাবাসীর উদ্যোগেই তৈরি হয়েছে দেবীর স্থায়ী মন্দির। পুজোর দায়িত্বে প্রহ্লাদের বংশধরেরা থাকলেও বর্তমানে এই পুজো সর্বজনীন রূপ পেয়েছে। প্রহ্লাদ মেটের বর্তমান বংশধর গৌড় মেটে বলেন, “আমাদের পূর্বপুরুষেরা ডাকাতি করতেন। তাঁদের প্রথা মেনে এখনও কিছু জিনিস চুরি করে এনে পুজোর কাজে লাগানো হয়। তবে তা প্রতীকী হিসাবেই করা হয়।” তিনি আরও জানান, পুজোয় প্রায় পাঁচ কুইন্ট্যাল কদমার নৈবেদ্য দেওয়া হয়। গ্রামের সকলে এই পুজোয় যোগ দেন।