মিঠুন মুর্মু
ঋণ নিয়ে ট্রাক্টর কিনেছিলেন। কার্যত লকডাউন বলে সেই ট্রাক্টরের ভাড়া হচ্ছিল না। ফলে ২ মাস ধরে তার কিস্তির টাকাও শোধ করতে পারছিলেন না গুসকরার বাসিন্দা মিঠুন মুর্মু। রবিবার রাতে বছর বত্রিশের মিঠুনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তাঁর পাড়ার একটি গাছ থেকে। পরিবারের দাবি, কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পেরেই অবসাদগ্রস্ত মিঠুন আত্মঘাতী হয়েছেন।
পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরবাগান এলাকার বাসিন্দা ছিলেন মিঠুন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিঠুনরা পাঁচ বোন এবং এক ভাই। তিন বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বাড়িতে রয়েছেন বাবা, মা, মিঠুনের স্ত্রী, তাঁদের দুই ছেলে এবং মিঠুনের অবিবাহিত দুই বোন। ঋণ করে ট্রাক্টর কিনে নিজেই চালিয়ে ভাড়া খাটাতেন মিঠুন। মূলত তাঁর আয়েই সংসার চলতো। মিঠুনের বাবা সোমাই মুর্মু হৃদরোগী। তাঁর চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু টাকা খরচ হয়ে যায়। বাজারে বেশ কিছু টাকা ঋণও হয়ে গিয়েছিল। ট্রাক্টরের দু’টি কিস্তির টাকা সেই কারণে দিতে পারেননি মিঠুন। মৃতের স্ত্রী সুন্দরী মুর্মু জানিয়েছেন, কিস্তির মেটাতে তাঁর স্বামীর কাছে তাগাদা আসছিল ঋণ দেওয়া সংস্থার কাছ থেকে। এ নিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তাঁর স্বামী। রবিবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পর সুন্দরীর সঙ্গে মিঠুনের কথা কাটাকাটি হয়। তখন বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান মিঠুন। রাতে খোঁজখবর শুরু করার পর পাড়ার একটি শিশুগাছে মিঠুনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
রবিবার রাতে মিঠুনের দেহ উদ্ধার করে গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ। তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য সোমবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের পুলিশ মর্গে পাঠানো হয়। এ প্রসঙ্গে বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে জানতে হবে ঠিক কারণে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই ব্যক্তি। তবে রাজ্য সরকার সব রকম ভাবে সাধারণ মানুষের পাশে আছে।’’