MLA

নির্দল দাঁড় করিয়ে হারাব’, দাবি নেতার

শনিবার কুলটির একটি বেসরকারি প্রেক্ষাগৃহে কুলটি বিধানসভা এলাকায় তৃণমূলের বিভিন্ন গণ-সংগঠনের নেতৃত্ব এবং দলীয় কাউন্সিলদের একটি বৈঠক ডাকেন বিধায়ক।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

কুলটি শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২০ ০০:২৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

দলের কর্মিসভায় এলাকার অর্ধেকের বেশি কাউন্সিলরের দেখা নেই। শনিবার তা দেখে দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ কুলটির তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আগামী দিনে এঁরা ভোটে (আসানসোল পুরভোট) দলের টিকিট পাবেন না। টিকিট পেলেও আমি নির্দল দাঁড় করিয়ে এদের হারিয়ে দেব।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘আগেও হারিয়েছি।’’ বিধায়কের এই মন্তব্য দলের ভিতরের ‘কোন্দল’কে ফের বেআব্রু করে দিল কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশের মধ্যে। যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘এটা আসলে উজ্জ্বলদা’র অভিমানের প্রকাশ। তিনি দিদি (তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ও দলকে ভালবাসেন।’’

Advertisement

শনিবার কুলটির একটি বেসরকারি প্রেক্ষাগৃহে কুলটি বিধানসভা এলাকায় তৃণমূলের বিভিন্ন গণ-সংগঠনের নেতৃত্ব এবং দলীয় কাউন্সিলদের একটি বৈঠক ডাকেন বিধায়ক। বৈঠক চলাকালীন উজ্জ্বলবাবু দেখেন, বিধানসভা এলাকার ২৭ জন দলীয় কাউন্সিলরদের মধ্যে উপস্থিত হয়েছেন মাত্র ১১ জন। যোগ দেননি গণ-সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা। এর পরেই উজ্জ্বলবাবুর মন্তব্য, ‘‘এক দল কাউন্সিলর ও গণ-সংগঠনের নেতা বৈঠকে উপস্থিত থাকেন না। এঁরা দলের সুবিধা নিলেও কোনও কাজ করছেন না।’’ নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়ে হারানোর মন্তব্য তার পরেই আসে। তৃণমূল সূত্রের দাবি, বিধায়কের এই বক্তব্যের পরে বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন মৃদু প্রতিবাদও করেন।

কিন্তু ১৬ জন কাউন্সিলর কেন যাননি ওই বৈঠকে? বৈঠকে ‘অনুপস্থিত’ তৃণমূল কাউন্সিলর অভিজিৎ আচার্য, ইন্দ্রাণী আচার্যদের দাবি, ‘‘উজ্জ্বলবাবুর ডাকা কোনও বৈঠকেরই খবর মেলে না। তৃণমূল কারও ব্যক্তিগত দল নয়।’’

Advertisement

এ দিকে, বিধায়কের এই মন্তব্য কুলটিতে দলের কোন্দলকেই ফের প্রকাশ্যে আনল বলে মনে করছেন দলের স্থানীয় নেতা, কর্মীদের একাংশ। তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, মাস কয়েক আগে কুলটির জল প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁকে ডাকা হয়নি বলে প্রকাশ্যেই আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন ডেপুটি মেয়র তথা কুলটির ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তবস্সুম আরা। বৈঠকে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতৃত্বের একাংশের দাবি, এ দিন অনুপস্থিত কাউন্সিলর ও নেতারা দলের অন্দরে মেয়রের অনুগামী হিসেবেই পরিচিত। ফলে, উজ্জ্বলবাবুর এই মন্তব্য আদতে মেয়র তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্রবাবুকেই বার্তা দেওয়া কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে এলাকায়। দলের নেতা, কর্মীদের একাংশ জানান, গত লোকসভা ভোটের আগেও উজ্জ্বলবাবু প্রকাশ্যেই কর্মীদের জানিয়েছিলেন, আসানসোল থেকে কেউ দল চালাতে চাইলে, তিনি তা মানবেন না।

যদিও কোন্দলের ‘তত্ত্ব’ স্বীকার করেননি কোনও নেতা। উজ্জ্বলবাবু ‘দলনেত্রী ও দলকে ভালবাসেন’ বলার পাশাপাশি, জিতেন্দ্রবাবুর সংযোজন: ‘‘কোনও ভুল বোঝাবুঝি হয়ে হয়েছে কি না, তা দেখতে হবে।’’ উজ্জ্বলবাবুর দাবি, ‘‘আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। আমি বলতে চেয়েছি, দলের কাউন্সিলরদের অবশ্যই দলের সব বৈঠকে উপস্থিত হওয়া দরকার।’’

টিকিট পাওয়া, না-পাওয়া নিয়ে তৃণমূলের জেলার অন্যতম মুখপাত্র অশোক রুদ্র বলেন, ‘‘কুলটির এই বিষয়টির উপরে নজর রয়েছে। দলের প্রার্থী কে হবেন, তা শীর্ষ নেতৃত্বই ঠিক করেন।’’ তবে ‘এই বিষয়’ বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা ভেঙে বলেননি অশোকবাবু। প্রতিক্রিয়ার জন্য যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। জবাব আসেনি মেসেজের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement