—প্রতীকী চিত্র।
শ্রীঘরে হয়েছিল পরিচয়। সেখানে প্রেম। দুই কয়েদির সেই প্রেমই পরিণতি পেল বৈবাহিক সম্পর্কে। না, এটা কোনও চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য নয়! বাস্তবেই ঘটেছে। বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে থাকা অন্য বন্দি ও কারাগাররক্ষীদের কেউই আবদুল হাসিম ও শাহানারা খাতুনের প্রেমে বাধা হয়ে ওঠেননি। মানবাধিকার সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি সহযোগিতায় চার হাত এক হল বন্দি-যুগলের।
আবদুলের বাড়ি অসমের দোরাং জেলার দলগাঁও থানা এলাকার রঙ্গনগারোপাথার গ্রামে। আর তার প্রেমিকা শাহানারা বীরভূমের নানুর থানার উচকারণ-বালিগড়ির বাসিন্দা। মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা জানান, ধর্ষণের মামলায় হাসিম ৮ বছর ও খুনের মামলায় শাহানারা ৬ বছর ধরে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি রয়েছেন। সেখানেই হাসিমের সঙ্গে পরিচয় হয় শাহানারার।
হাসিম এবং শাহানারা দু’জনেই জানান, বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দিদশাতেই তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চান। তাতে তাদের দু’জনের পরিবারের কেউই আপত্তি করেননি। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য তাঁরা মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। হাসিমের বাবা আবদুস সাত্তার নিজে তাঁর বন্দী ছেলের ইচ্ছার কথা মানবাধিকার সংগঠনকে জানান। এ বিষয়ে অনুমতির জন্য গত ১৬ জুন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরিরও দ্বারস্থ হন তিনি। আবেদন মঞ্জুর হতেই শুরু হয় যুগলের বিয়ের আয়োজন। শুক্রবার মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে সব আইনি প্রক্রিয়া মেনে তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। নবদম্পতির কথায়, “কপাল দোষে শ্রীঘরবাসী হয়েছি। এখন আমরা মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছি। মুক্তি পেয়ে গেলে সুখের সংসার গড়ব।’’
মানবাধিকার সংগঠনের কর্তা শামসুদ্দিন শেখ বলেন, “আবদুল ধর্ষনের মামলা ও শাহানারা খুনের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি রয়েছেন। তাঁরা দু’জন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চেয়েছিলেন। তা নিয়ে তাঁদের পরিবার কারামন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়। আবেদন মঞ্জুর হলে তারা প্যারোলে মুক্তি পান। ১৬ জুলাই ফের তাঁদের সংশোধনাগারে ফিরে যেতে হবে।”