আদালতের পথে। নিজস্ব চিত্র।
সুদের কারবারি খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত দীপ বাউড়ি ও শিবনাথ রজককে বুধবার আসানসোল আদালতে তোলা হয়। তাদের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়। পুলিশ জানিয়েছে, চিনাকুড়ির এই ঘটনায় আরও কয়েক জন জড়িত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের খোঁজ চলছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও কিছু তথ্য জানার চেষ্টা হচ্ছে।
গত ১৫ এপ্রিল চিনাকুড়ি তিন নম্বর এলাকার লাইনপাড়ের বাসিন্দা উমাশঙ্কর চৌহানকে তাঁর কার্যালয়ে ঢুকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। কার্যালয়ের ভিতরে ও বাইরে বসানো সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ফুটেজের ছবি থেকে পুলিশ দীপকে শনাক্ত করে। তাকে চিনাকুড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, দীপ ভাড়াটে খুনি। উমাশঙ্করকে লক্ষ্য করে তাকেই পর পর গুলি চালাতে দেখা গিয়েছে সিসিটিভির ফুটেজে। পুলিশের দাবি, জেরায় সে গুলি করার কথা স্বীকারও করেছে। এই কাজের এক লক্ষ টাকা নিয়েছিল বলে সে জেরায় স্বীকার করেছে দাবি পুলিশের।
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, এর আগে কোনও থানায় দীপের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। ঘটনার দিন সে প্রথমবার উমাশঙ্করের কার্যালয়ে ঢোকে। কিছু কথোপকথনের পরে বেরিয়ে যায়। কিছু ক্ষণ পরে ফিরে এসে সে ওই ব্যবসায়ীকে গুলি করে। তার পরে অন্য একজনের সঙ্গে মোটরবাইকে করে চম্পট দেয়। ডিসিপি (পশ্চিম) আশিস মৌর্য বলেন, “দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও কয়েক জন জড়িত আছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
লোকসভা ভোটের মুখে দিনদুপুরে জনবহুল এলাকায় এমন একটি খুনের ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েছিল পুলিশ। শিল্পাঞ্চল জুড়ে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের রমরমা ও আইন-শৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। তবে ঘটনার ১০ দিনের মাথায় ভাড়াতে খুনি-সহ দু’জন ধরা পড়ায় খুশি স্থানীয়েরা। দ্রুত এই ঘটনার রহস্য উন্মোচনও হবে বলে আশা স্থানীয়দের।
গত ১০ নভেম্বর তিন নম্বর অঞ্চলেই প্রাতর্ভ্রমণের সময়ে খুন হয়েছিলেন আরও এক সুদের কারবারি। সে বারও দিন সাতেকের মধ্যে ভাড়াটে খুনিকে গ্রেফতার করে রহস্য উন্মোচন করেছিল পুলিশ। পুলিশের দাবি, উমাশঙ্কর চৌহানকে খুনে আরও কয়েকজন জড়িত রয়েছে। তাদের নাম ও বহু তথ্য পাওয়া গিয়েছে ধৃতদের কাছ থেকে। তারা এই মুহূর্তে পলাতক। এই ঘটনার তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, পলাতকদের হদিস পাওয়া গিয়েছে। তারা দ্রুত ধরা পড়বে। খুব দ্রুত খুনের কারণ জানা যাবে।