স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে বাস। নিজস্ব চিত্র
মিনিবাসকর্মী ও চালকদের মারধরের অভিযোগ উঠল টোটো চালকদের বিরুদ্ধে। এর জেরে বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার সারাদিন যানচলাচল ব্যহত হয়। নাকাল হন নিত্যযাত্রীরা। ঘটনাটি রানিগঞ্জের।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনার সূত্রে বুধবার সন্ধ্যায়। তপসী রেলগেট বন্ধ থাকায় উখড়া-রানিগঞ্জ রুটের একটি মিনিবাস বেশ কিছুক্ষণ আটকে পড়ে। টোটো চালকদের অভিযোগ, ‘লেট ফাইন’ বাঁচানোর জন্য গেট ওঠার পরে দ্রুত গতিতে বাসটি রানিগঞ্জ ঢোকে। নেতাজি সুভাষ বসু রোডের শীতলা মন্দিরের কাছে একটি টোটোকে বাস চালক কোনওরকমে পাস কাটিয়ে চলে যায়। এরপর এ ভাবে বাস চালানোয় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো এই অভিযোগ তুলে, রানিগঞ্জ শহরের প্রধান বাসস্ট্যান্ডে বাসটি পৌঁছতেই কয়েকজন টোটো চালক ওই বাস চালকের উপর চড়াও হন বলে অভিযোগ। তখনকার মতো অন্য বাসকর্মী ও নিত্যযাত্রীদের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মিটে যায়।
কিছুক্ষণ পরে ৬০-৭০ জন টোটো চালক ওই বাস চালক-সহ অন্য বাস কর্মীদের মারধর করেন বলে অভিযোগ। বাদ যাননি স্থানীয় হোটেল ও গাড়ির চাকার দোকানের কর্মীরাও। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও বর্ধমানের অন্য অংশের সঙ্গে যোগাযোগকারী ১৪৩টি মিনিবাস ও ৭০টি বাসের চালক গাড়ি চালানো বন্ধ করে দেন। আসানসোল-দুর্গাপুর মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সহকারী সম্পাদক উত্তম রক্ষিতের দাবি, বার বার এমন ঘটনা ঘটছে। আশ্বাস দিলেও প্রশাসন ব্যহস্থা নিচ্ছে না। চার জন বাসকর্মী আহত হয়েছেন বলেও অভিযোগ। সমস্যা সমাধানের জন্য জেলাশাসকের হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে। এর পরেও যদিও সুবিচার না মেলে, তা হলে কোনও বাসকর্মী গাড়ি চালাতে চাইবেন না। এ দিকে, তৃণমূল প্রভাবিত পরিবহণ নেত্রী হেনা খাতুন জানান, বছর পনেরো আগে নেতাজি সুভাষ বসু রোড ষাট নম্বর জাতীয় সড়কের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু রাস্তা সম্প্রসারিত হয়নি। এ দিকে যান বাহনের সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। টোটোই চলছে ১২০০-এর বেশি। বিভিন্ন গাড়ি চালকদের মধ্যে মাঝে মাঝে ঝামেলা হয়। রাস্তা সম্প্রসারণ হলে এই সমস্যা মিটে যাবে।
সমস্যা মেটাতে এ দিন বিকেলে উভয় পক্ষকে নিয়ে তাঁর দফতরে বৈঠক করেন পশ্চিম বর্ধমান জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি। উপস্থিত ছিল পুলিশও। দীর্ঘক্ষণ বৈঠক চলে। সেখানে ঠিক হয়, আজ, শুক্রবার থেকে বাস চলবে। অন্য দিকে, বুধবারের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা-সহ অন্য দাবিগুলি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।