Migratory Birds

রঙিন পাখি দেখতে ক্যামেরা বাগিয়ে ভিড় পর্যটকদের

দমদম থেকে পাখির ছবি তুলতে আসা কৃষ্ণেন্দু দাস বলেন, “পাখি দু’টির মধ্যে একটি পুরুষ এবং একটি মহিলা রয়েছে। এরা ব্লাক ন্যাপেড মনার্ক (কালো ঘাড় রাজন) প্রজাতির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৪ ০৮:৩৮
Share:

পূর্বস্থলীতে দেখা যাচ্ছে এই ধরনের পাখি। বাঁ দিকে, শাহ বুলবুল। ডান দিকে, কালো ঘাড় রাজন। নিজস্ব চিত্র।

সম্প্রতি দু’টি বিশেষ প্রজাতির পাখি ও তাদের ছানাদের দেখা গিয়েছে পূর্বস্থলী ২ ব্লকের বেলগাছি এবং পলাশপুলিতে। এই দুই প্রজাতির রঙিন পাখিদের গতিবিধি ক্যামেরা বন্দি করতে রাজ্যের নানা প্রান্তের পর্যটক ও পাখিপ্রেমীদের ভিড় বেড়েছে ওই এলাকায়। সকাল থেকেই ক্যামেরা তাক করে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে তাঁদের। পাখি বিশেষজ্ঞদের দাবি, হই হট্টগোল বাড়ায় পাখিদের স্বাভাবিক গতিবিধি বিঘ্নিত হয়, তারা নিরাপত্তার অভাব বোধ করে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলগাছির আমবাগানে কিছু দিন হল ইন্ডিয়ান প্যারাডাইস (শাহ বুলবুল) নামে লম্বা লেজের দু’টি পাখি বাসা বেঁধেছে। সেখানে তাদের তিনটি ছানাও দেখা গিয়েছে। দিন পাঁচেক ধরে সেখানে বড় বড় ক্যামেরা স্ট্যান্ডে রেখে পর্যটকেরা ছানা-সহ পাখিগুলির নানা দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি করছেন। বেড়েছে শোরগোলও। শাহ বুলবুল দু’টিকেও এক গাছ থেকে অন্য গাছে ছুটতে দেখা যাচ্ছে। একই দৃশ্য পলাশপুলি এলাকায়। সেখানেও পাখির ছবি তোলার জন্য একটি নার্সারির রাস্তার পাশে অসংখ্য ক্যামেরা বাগিয়ে বসেছেন পাখিপ্রেমীরা। কিছুটা দূরেই পাখির বাসা। একটির গায়ের রঙ নীল। অন্যটির ধূসর। বাসায় দু’টি ছানাও হয়।

দমদম থেকে পাখির ছবি তুলতে আসা কৃষ্ণেন্দু দাস বলেন, “পাখি দু’টির মধ্যে একটি পুরুষ এবং একটি মহিলা রয়েছে। এরা ব্লাক ন্যাপেড মনার্ক (কালো ঘাড় রাজন) প্রজাতির। দক্ষিণ ভারত থেকে ডিম পাড়তে পাখিগুলি জন্য দক্ষিণ বঙ্গের নানা এলাকায় আসে।” পূর্বস্থলী সাংস্কৃতিক মঞ্চের সভাপতি নিরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, “নীল রঙের পাখিটিকে দীর্ঘক্ষণ দেখেছি। এমন সুন্দর পাখি এলাকায় আগে দেখিনি।”

Advertisement

এই ব্লকেই রয়েছে চুপির পাখিরালয়। সারা বছরই সেখানে পর্যটকেরা নৌকায় ঘুরে ঘুরে ছাড়িগঙ্গায় আসা পাখিদের ছবি তোলেন। জানা গিয়েছে, কলকাতা, হালিশহর, আসানসোল, দুর্গাপুর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সেখানে আসেন। ছাড়িগঙ্গার কিছু মাঝিরা জানিয়েছেন, তাঁদের টেলিফোনে যোগাযোগ থাকে পাখিপ্রেমী ও পর্যটকদের সঙ্গে। এলাকায় নতুন ধরনের পাখি এলেই তাঁদের কাছে খবর পৌঁছে দেন মাঝিরাই।

পাখি বিশেষজ্ঞরা জানান, বেলগাছি এবং পলাশপুলি এলাকায় যে দুই প্রজাতির পাখি দেখা গিয়েছে তারা বিরল প্রজাতির নয়। তবে এদের সংখ্যা কমে এসেছে। সাধারণত গাছের উপরের অংশে এদের চলা ফেরা থাকে। এক মাত্র ডিম পাড়ার সময় গাছের নীচের অংশে এরা বাসা করে যাতে বাজ, চিলে ডিম ও বাচ্চার ক্ষতি না করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভিড় বাড়ার ফলে পাখিরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করে। অনেক সময় তারা উড়ে গিয়ে আর বাসায় ফেরে না। ফলে তাদের ডিমে তা দেওয়া বা বাচ্চার খাবার জোগাড় হয় না। তাদের বংশবৃদ্ধিতে বিঘ্ন ঘটে। জেলার এক পাখি বিশেষজ্ঞ বলেন, “এই ধরনের পাখিরা যাতে নিরাপত্তার অভাব বোধ না করে তা বন দফতরের দেখা উচিত।”

বন দফতরের কাটোয়ার রেঞ্জার শিবপ্রসাদ সিংহ জানান, “বৃহস্পতিবার পূর্বস্থলীর দু’টি এলাকায় বনকর্মীরা যান। পাখিদের নিরাপত্তার বিষয়টি
দেখা হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement