Bardwan University

টিএমসিপি-র ‘দ্বন্দ্বে’ তেতে বিশ্ববিদ্যালয়

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানানো হয়েছে, বহিরাগত হামলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরের গোলমাল ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশকে টহল দেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:৫৭
Share:

পুলিশকে টহল দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। —ফাইল চিত্র।

টিএমসিপি-র ‘দ্বন্দ্বে’ সরগরম বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। কয়েক দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হস্টেলে গোলমাল, তার জেরে বহিরাগতদের দিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় অভিযোগ করে। ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছেন জেলা টিএমসিপি সভাপতি স্বরাজ ঘোষ-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপির নেতারা। বিবেকানন্দ হস্টেলের মেস কমিটিও সংশ্লিষ্ট জায়গায় অভিযোগ জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানানো হয়েছে, বহিরাগত হামলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরের গোলমাল ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশকে টহল দেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে।

Advertisement

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্তরঞ্জন হস্টেলের আবাসিক, বীরভূমের ইলামবাজারের রজনীকান্ত দাস বৈরাগ্য বর্ধমান থানায় অভিযোগে জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, গত মঙ্গলবার রাতে স্বরাজের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতা, ডায়মন্ড হারবারের বাসিন্দা রবিউল হালদার, তাঁর ভাই ইয়াসিন হালদার-সহ কিছু বহিরাগত দুষ্কৃতী হস্টেলের ভিতর ঢুকে ইট, পাথর ছুঁড়তে থাকে। তাতে হস্টেলের দরজা, জানালার কিছু অংশ ভেঙে যায়। তাঁরা বেরিয়ে এলে আবাসিকদের বেশ কয়েক জনকেও বাঁশ, রড দিয়ে আক্রমণ করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগকারীর দাবি, তাঁর গলার হার ছিনিয়ে নিয়েছে দুষ্কৃতীরা। তাঁকে প্রাণে মারার চেষ্টারও অভিযোগও করেছেন তিনি। ওই অভিযোগে বহিরাগত দুষ্কৃতী হিসাবে ভেড়িখানার শক্তি বাল্মিকীর নাম রয়েছে। কয়েক দিন আগে, রাজ কলেজের অধ্যক্ষ নিরঞ্জন মণ্ডলও বহিরাগত দুষ্কৃতীদের যে তালিকা বর্ধমান থানায় জমা দিয়েছিলেন, তাতে শক্তির নাম ছিল।

পাল্টা অভিযোগে ইয়াসিন হালদার বর্ধমান থানায় জানিয়েছেন, রাত ১১টা নাগাদ চিত্তরঞ্জন হস্টেলে কয়েক জন আবাসিকদের সঙ্গে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। সেখানে রজনীকান্ত দাস বৈরাগ্য ছাড়াও আট জনের নাম রয়েছে। যাঁরা অন্য হস্টেলের আবাসিক বলে জানানো হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, ওই অভিযুক্তরা তাঁকে বাঁশ, রড, লাঠি দিয়ে মারধর করেছে। তাঁর কাছে থাকা সরস্বতী পুজোর দু’হাজার টাকাও লুট করেছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

অন্য দিকে, বিবেকানন্দ হস্টেলের মেস কমিটির অভিযোগ, শক্তি বাল্মিকী-সহ আরও কিছু বহিরাগত দুষ্কৃতী হস্টেলের ভিতর ঢুকে নিরাপত্তা রক্ষীকে হেনস্থা করে। হামলা চালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ খবর পেয়ে হস্টেলের সামনে এসে পরিস্থিতির সামাল দেয়। এই ঘটনায় তাঁরা ‘ভীত ও সন্ত্রস্ত’ বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাড়াও জেলা প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তথা রাজ্য টিএমসিপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক খোন্দেকার আমিরুল ইসলাম ওরফে রামিজের দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগঠন রয়েছে। সেখানেই পা রাখতে চাইছেন জেলা টিএমসিপির সভাপতি স্বরাজ ঘোষের অনুগামীরা। কয়েক সপ্তাহ আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন রাজবাটীর ছাত্র সংসদে স্বরাজের অনুগামীরা ঢুকেও গিয়েছিলেন। তারপর থেকে ‘দ্বন্দ্ব’ চরমে উঠেছে।

রামিজ বলেন, “দুষ্কৃতীমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে হবে। যাঁরা দুষ্কর্মে যুক্ত তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।” ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, চিত্তরঞ্জন হস্টেলের আবাসিক রবিউল হালদার বলেন, “আমার ভাইয়ের উপরে হামলা চালানো হয়েছে। হস্টেলের অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করার জন্য এই হামলা। যাঁরা হামলা চালিয়েছে, তাঁরা ১০-১৫ বছর ধরে হস্টেলেই থেকে যাচ্ছে!”

আর জেলা টিএমসিপি সভাপতি স্বরাজ ঘোষের দাবি, “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ। ঘটনার বিন্দুবিসর্গ আমি জানি না। যে সময়ের ঘটনা বলে অভিযোগ করা হচ্ছে, তখন আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। পুলিশ তদন্ত করলেই জানতে পারবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement