বর্ধমান শহর ভাঙচুর, লুটপাটের ঘটনায় অভিযুক্ত গোলাপ সোনকার। —নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমান শহরের স্টেশন এলাকায় দোকান, গাড়ি ভাঙচুর থেকে লুটপাট এবং মারধরে জড়িত থাকার অভিযোগে এক তৃণমূলকর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় ধৃত কর্মীর বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হামলার অভিযোগও উঠেছে। যদিও ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোল মেলেনি বলে পুলিশের দাবি। মঙ্গলবার আদালতে হাজির করানো হলে ধৃতকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর দাবি করেন অভিযুক্তের আইনজীবী। দু’পক্ষের সওয়ালের পর ধৃতকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম। এই ঘটনাকে এলাকা দখলের জন্য তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। তবে একে ব্যক্তিগত ঝামেলা বলে পাল্টা দাবি তৃণমূলের।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যায় বর্ধমান শহরের চৌধুরী চিঁড়ামিল গলি থেকে গোলাপ সোনকার নামে এক তৃণমূলকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্ধমান শহরের তিনকোনিয়া গুডস শেড রোড এলাকায় তাঁর বাড়ি। অভিযোগ, রবিবার রাতে লাঠি, রড নিয়ে স্টেশন এলাকায় হামলা চালান গোলাপ-সহ বেশ কয়েক জন। বেশ কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালান তাঁরা। সেই সঙ্গে মোটরবাইক ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। হামলার সময় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাধা দিতে এলে তাঁদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এই হামলার ঘটনায় বর্ধমান থানার অভিযোগ দায়ের করেন আলুডাঙার ঘোষপাড়ার বাসিন্দা সুরজিৎ মাঝি। তাঁর অভিযোগ, লাঠি, রড, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এলাকায় তাণ্ডব চালায় হামলাকারীরা।
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর বিরোধের জেরে হামলা চালানো হয়েছে। স্টেশন এলাকার কর্তৃত্ব কোন গোষ্ঠীর হাতে থাকবে, তা নিয়ে এই বিরোধ বলে অভিযোগ। একই দাবি করেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রের দাবি, ‘‘এটা হল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে এলাকা দখলের লড়াই। দখলে থাকলে টাকা আসবে। তাই কেউ দখল ছাড়তে চায় না। এ নিয়ে গোটা শহরে নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা চলছে।’’ যদিও এ দাবি মানতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাসের পাল্টা দাবি, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। এটা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ঝামেলা। তদন্ত করছে প্রশাসন। সুতরাং প্রশাসন আইন অনুযায়ী কাজ করছে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার বর্ধমান সিজেএম আদালতে হাজির করানো হলে ধৃতকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম। ২০ মে তাঁকে ফের আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।