কীর্তি আজ়াদের বকুনির মুখে এক ইঞ্জিনিয়ার। —নিজস্ব চিত্র।
মাত্র এক মাস আগে তৈরি রাস্তার হাল বেহাল। সেই দেখে ক্ষুব্ধ বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজ়াদ। রাস্তার দশা দেখে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের জিনসে্র পকেটে স্টোনচিপ ভরে দিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার-সাংসদ। যা দেখে হাততালি দিয়ে উঠলেন রাস্তার চার পাশে ভিড় করা মানুষজন। কেউ কেউ সাংসদের মারকাটারি মেজাজ দেখে ছবিও তুলে রাখলেন মোবাইলে।
মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের গলসির মনোহর-সুজাপুরে গিয়েছিলেন কীর্তি। সেখানে একটি সদ্য নির্মীয়মাণ রাস্তা দেখে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে ডাকেন তিনি। তাঁকে বলেন, ‘‘আপনার সুপারিনটেন্ডেন্ট ইঞ্জিয়ারকে বলবেন, এটা দেখতে। তিনি এই রাস্তা নিয়ে কী করবেন সেটা নিয়ে ভাবতে। এই রাস্তা কি তাঁর চোখে পড়েনি?’’ সাংসদের আশপাশে স্থানীয়দের ভিড় তখন জমতে শুরু করেছে। ’৮৩-র বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য, সাংসদকে এই ‘ফর্মে’ দেখে কেউ কেউ হাততালি দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। সাংসদ জানান, তিনি সাধারণ মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে রাস্তা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। অ্যাসিন্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে একের পর এক প্রশ্ন করেও কোনও সদুত্তর না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে যান। সাংসদ এ-ও বলেন, ‘‘রাস্তা নিয়ে মানুষের অভিযোগ পেয়ে এক জন সাংসদ আসতে পারেন। কিন্তু এগ্জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আসতে পারেন না?’’ তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘‘দিদির (মমতা) সরকার গ্রামের মানুষের জন্য কাজ করছে। এতো ভাল ভাল প্রকল্প করছে, আর মানুষকে এই ভাবে অসুবিধা পোহাতে হচ্ছে!’’ তিনি জানান, এ নিয়ে জেলাশাসককে চিঠি লিখবেন। রাস্তার এই অবস্থা কেন, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলবেন। একই সঙ্গে, যে সংস্থাকে দিয়ে ওই রাস্তা নির্মাণ করানো হয়েছে, তাদের দিয়েই রাস্তা ঠিক করানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলবেন।
এর পর স্থানীয়দের উদ্দেশেও বার্তা দেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেন, ‘‘কারও কোনও অসুবিধা থাকলে অবশ্যই আমার কাছে আসবেন। সরাসরি আমার কাছে আসুন। টিভি দেখে নয়।’’ সাংসদকে এ ভাবে দেখে খুশি গ্রামবাসীরা। তাঁরা জানান, এ বার থেকে নাগরিক সমস্যা সমাধানে সাংসদের কাছেই যাবেন। এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, ‘‘সাংসদের এই কড়া অবস্থানের পর আমাদের রাস্তা নিয়ে দাবি দ্রুত পূর্ণ হবে বলে আশা করছি।’’