উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসানসোলের পুর-প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। এখানেই বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়কে ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ। সোমবার। ফাইল চিত্র।
এলাকায় আসানসোল পুরসভা নির্মিত একাধিক সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি তাঁকে। কারণ জানতে চাওয়ায় পশ্চিম বর্ধমানের কুলটির তিন বারের তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পাইনি। খুবই দুঃখ পেয়েছি। কিন্তু এ সব নিয়ে ভাবি না।’’ সোমবার ওই প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করেন পুর-প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। বিধায়ককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল কি না, সে বিষয়ে মন্তব্য না করে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এটি একেবারেই পুরসভার নিজস্ব অনুষ্ঠান।’’ ঘটনায় দু’পক্ষের মধ্যে ‘কোন্দলের’ ছায়াও দেখতে পাচ্ছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা,কর্মীদের একাংশ।
আসানসোল পুরসভার তত্ত্বাবধানে সম্প্রতি তৈরি করা হয়েছে কুলটির ডিসেরগড়ে ছিন্নমস্তা শ্মশানঘাটে একটি বৈদ্যুতিক চুল্লি, ডিসেরগড় ও লছিপুরে দু’টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক বাসস্ট্যান্ড এবং বরাকরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবন। সোমবার এই চারটি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানে ছিলেন পুরসভার তিন বিদায়ী কাউন্সিলর এবং পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য পূর্ণশশী রায়, অশোক রুদ্র। ঘটনাচক্রে, এঁরা সবাই দলের অন্দরে জিতেন্দ্রবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত। এই বিষয়টিকে সামনে রেখেই উজ্জ্বলবাবুর অনুগামী হিসেবে যাঁরা এলাকায় পরিচিত, তাঁদের একাংশের দাবি, এলাকার তিন বারের বিধায়ককে আমন্ত্রণ না জানানোটা ‘অন্যায়’।
উজ্জ্বলবাবুর অনুগামী হিসেবে দলের অন্দরে পরিচিত যুব তৃণমূলের কুলটি ব্লক সভাপতি বাবন মুখোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘দলের বিধায়ককে আমন্ত্রণ না জানানোটা ঠিক নয়। এর ফলে, যুবকর্মীরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন।’’ একই ভাবে তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মহেশ্বর মুখোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিধায়ককে ডাকার ন্যূনতম সৌজন্য দেখানো হল না।’’
ঘটনাচক্রে, কুলটিতে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব নতুন নয়। গত ১১ ডিসেম্বর তৃণমূলের একটি দলীয় কর্মসূচির সভামঞ্চে বসতে না পেয়ে প্রকাশ্যেই কোন্দলের অভিযোগ তুলেছিলেন তৃণমূলের মাইনরিটি সেলের ব্লক সভাপতি আমজাদ আনসারি। তা নিয়ে তাঁকে উজ্জ্বলবাবুর সঙ্গে প্রকাশ্যে বিবাদেও জড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে। এই খবর পেয়ে দলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্রবাবুও সে দিন দু’পক্ষের সমস্যা মেটাতে পদক্ষেপ করবেন বলে জানান। কিন্তু ওই ঘটনার পরে এমন ঘটনায় দলের ‘কোন্দল’ ফের প্রকাশ্যে এল বলে মনে করছেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতা, কর্মীদের একাংশ। যদিও সে প্রসঙ্গে জিতেন্দ্রবাবু এবং উজ্জ্বলবাবু মন্তব্য করতে চাননি।