TMC

জেলা জুড়ে শান্তির বার্তা নেতৃত্বের

,পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্রবাবু হরিপুরে তাঁর বিধায়ক কার্যালয়টি ‘দখল’ করার অভিযোগ করেছিলেন। সে কাণ্ডের ‘নেতৃত্বে’ দেখা যায়, দলের অন্দরে জিতেন্দ্রবাবুর বিরোধী বলে পরিচিত তৃণমূলের পাণ্ডবেশ্বর ব্লক সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

‘শান্তি! শান্তি! শান্তি!’ — দল ত্যাগ করে দ্রুত জিতেন্দ্র তিওয়ারির তৃণমূলে ‘পুনরাগমনে’র পরে, শনিবার এটাই বার্তা খোদ জিতেন্দ্রবাবু, দলের অন্দরে তাঁর অনুগামী এবং বিরোধী বলে পরিচিত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষেরই। যদিও, এর পরেও কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনার খবর মিলেছে জেলা থেকে।

Advertisement

শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় জিতেন্দ্রবাবু জানান, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের জেরে তৃণমূলের অনেক কর্মীরই ‘আবেগের বহিঃপ্রকাশ’ দেখা গিয়েছে। কিন্তু, তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের (যাঁরা তাঁকে ‘ভালবাসেন’) কাছে বার্তা, দলের স্বার্থে পাল্টা আক্রোশ নয়। তাঁর আর্জি, ‘‘যা ঘটেছে, তা ভুলে যেতে হবে।’’

এ দিকে, পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্রবাবু হরিপুরে তাঁর বিধায়ক কার্যালয়টি ‘দখল’ করার অভিযোগ করেছিলেন। ঘটনাচক্রে, সে কাণ্ডের ‘নেতৃত্বে’ দেখা যায়, দলের অন্দরে জিতেন্দ্রবাবুর বিরোধী বলে পরিচিত তৃণমূলের পাণ্ডবেশ্বর ব্লক সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে। তিনি এ দিন দলীয় নেতা, কর্মীদের (অনুগামীদের) বলেন, ‘‘অশান্তি করতে চাইছেন যাঁরা, তাঁরা করুক। আপনারা কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না। দলকে যাঁরা ভালবাসেন, তাঁদের কাছে অনুরোধ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলবেন তা মেনে চলুন।’’ ঘটনাচক্রে, শুক্রবার রাতে জিতেন্দ্রবাবু তৃণমূলেই থাকছেন জানানোর পরে, তাঁর অনুগামী বলে পরিচিতদের কয়েকজন পুনরায় হরিপুরের কার্যালয়টি ‘পুনর্দখল’ করেন। এই পরিস্থিতিতে পাণ্ডবেশ্বরে গোলমালের আশঙ্কা ছিল বলে ওয়াকিবহাল মহলের দাবি। তবে, জিতেন্দ্রবাবু ও নরেন্দ্রনাথবাবুর শান্তি-বার্তায় অবস্থার আপাতত সামাল দেওয়া গিয়েছে। তাঁদের দু’জনের মধ্যে ফোনে কথোপকথনও হয় বলে দাবি জিতেন্দ্রবাবুর।

Advertisement

পাশাপাশি, আসানসোলে শুক্রবারই ‘জিতেন্দ্র-বিদায়ে’র পরে মিছিল করতে দেখা যায় তৃণমূলের নেতা, কর্মীদের একাংশকে। এর নেতৃত্বে থাকা তৃণমূল নেতা রাজু অহলুওয়ালিয়া দাবি করেন, ‘‘যা করেছিলাম, তা সংশ্লিষ্ট জায়গার নির্দেশের ভিত্তিতেই।’’ তবে, তাঁর অভিযোগ, ‘‘জিতেন্দ্রবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত কয়েকজন শনিবার আমার উপরে হামলা চালানোর চেষ্টা করেন।’’ যদিও জিতেন্দ্রবাবু জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এমনটা ঘটে থাকলে তা ‘অন্যায়’ হয়েছে বলে দাবি তাঁর। জিতেন্দ্রবাবু দলে ফেরা প্রসঙ্গে তাঁর অনুগামী বলে দলের অন্দরে পরিচিত আসানসোলের বিদায়ী কাউন্সিলর ওয়াসিমুল হক বলেন, ‘‘এই ঘটনা দলের

ইতিবাচক পদক্ষেপ।’’

সেই সঙ্গে, শনিবার জিতেন্দ্রবাবুর ছবি দেওয়া পোস্টার পড়ে বার্নপুরে। সেখানে বাংলায় লেখা, ‘জিতেন্দ্র তিওয়ারি হটাও, আসানসোল বাঁচাও।’ পোস্টারের তলায় লেখা, ‘ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মীবৃন্দ’। যদিও বিজেপি নেতা বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, এটা তৃণমূলের ‘কোন্দলের’ ফল। যদিও আসানসোল দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে দলের নামে পোস্টার, তাঁরাই এ বিষয়ে বলতে পারবেন।’’

এ দিকে, জিতেন্দ্রর আপাত-‘বিদায়’-এর পরে, শুক্রবার দুর্গাপুরের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের সগড়ভাঙা জোনাল সেন্টারে কালী মন্দিরে পুজো দেন তৃণমূলের নেতা, কর্মীদের একাংশ। সেখানে ছিলেন, কাউন্সিলর সুনীল চট্টোপাধ্যায়, কাউন্সিলর শিপুল সাহা প্রমুখ। ওই ‘আনন্দ’-‘উল্লাস’ প্রসঙ্গে তৃণমূলের অন্যতম জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, এ বার দল নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাবে। এ দিন জিতেন্দ্রবাবু দলে ফেরার পরে তিনি বলেন, ‘‘আমি দলের শৃঙ্খলাবদ্ধ কর্মী। দলের নির্দেশ এবং গঠনতন্ত্র মেনে কাজ করি।’’ শিপুলবাবু জানান, তিনি ‘বঙ্গধ্বনি’ কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত।সামগ্রিক ভাবে বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য কমিটির অন্যতম সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, “এ নিয়ে কিছু বলার নেই। তবে দলের সমস্ত নেতা-কর্মীদের কাছে অনুরোধ, মারামারি করা যাবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement