আসানসোল স্টেশনে রেলের অনুষ্ঠানে। —নিজস্ব চিত্র।
রেলের মঞ্চকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার অভিযোগ তুলে আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। বিধায়ক অভিযোগ অস্বীকার করলেও বিষয়টি ঘিরে চাপানউতোর তীব্র হয়েছে আসানসোলে। তৃণমূলের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটূক্তি করেছেন বিজেপি বিধায়ক। তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার কথাও জানিয়েছে তারা। অভিযোগ মানতে নারাজ অগ্নিমিত্রা।
মঙ্গলবার দেশ জুড়ে রেলের নানা প্রকল্পের শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রেলের তরফে এই অনুষ্ঠান ভার্চুয়াল মাধ্যমে দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল আসানসোল স্টেশনে। তৈরি হয়েছিল একটি মঞ্চ। আসানসোল-হাতিয়া নতুন এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। ওই মঞ্চ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সেটির যাত্রা শুরু হয়। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন অগ্নিমিত্রা। তাঁর বক্তৃতায় রেলের নানা প্রকল্পের কথা উঠে আসে।
এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। তাল কাটে তার পরেই। মঞ্চে বসে রেলের প্রকল্পগুলি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করার সময়ে, সোমবার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বলবৎ হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আপনাকে আমি সতর্ক করে দিচ্ছি। আবার নাটক করা ও মানুষকে উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।’’ সঙ্গে যোগ করেন: ‘‘এটা পশ্চিমবঙ্গ থেকে কাউকে বার করে দেওয়ার আইন নয়। এটা শুধু পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে যে সব হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, পার্সি ও শিখ ধর্মের মানুষ অত্যাচারিত হয়ে ২০১৪-র ৩১ ডিসেম্বরের আগে এ দেশে এসেছেন, তাঁদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন।’’ অগ্নিমিত্রার আরও অভিযোগ, ‘‘এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মানুষকে ভুল বুঝিয়ে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে চাইছেন। কেউ যেনও তাঁর প্ররোচনায় পা না দেন।’’
বিজেপি বিধায়কের এই মন্তব্যের পরেই আসরে নামে তৃণমূল। তাদের প্রশ্ন, সরকারি মঞ্চকে রাজনৈতিক মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করা হল কেন? অগ্নিমিত্রার এই মন্তব্যকে ‘চরম অবমাননাকর, অবাঞ্ছিত এবং অসাংবিধানিক’ বলে কটাক্ষ করেন তৃণমূল জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে কটূক্তি করে উনি ভোটের মুখে সাধারণ মানুষের মন জয় করতে চাইছেন। এতে ফল বিপরীত হবে। আমরা এর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনে নামছি।’’
অগ্নিমিত্রার পাল্টা দাবি, সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চকে দলীয় মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ একেবারেই ঠিক নয়। অনেক আগেই সরকারি অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গিয়েছিল। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতেই সেখানে বসেছিলেন তিনি।