এই সভা ঘিরে বিতর্ক দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র সভা হয়েছে রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের (এসবিএসটিসি) প্রধান কার্যালয়ে। শুক্রবার দুর্গাপুরে সরকারি জায়গায় ‘রাজনৈতিক সভা’ ঘিরে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। উপস্থিত ছিলেন আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টিতে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব।
জানা গিয়েছে, সংগঠনের ঠিকা শ্রমিকদের যথাযথ মজুরি দেওয়া, ন্যূনতম ২৬ দিনের কাজ, দুর্নীতিগ্রস্ত আধিকারিকদের সরিয়ে দেওয়া-সহ নানা দাবিতে ওই সভা ডাকে আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত এসবিএসটিসি এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন। ঋতব্রত ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক, প্রাক্তন জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়, পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দীপঙ্কর লাহারা। ঋতব্রত অভিযোগ করেন, বিজেপি সরকার সারা দেশে গণ-পরিবহণ ব্যবস্থাকে বেসরকারিকরণের পথে ঠেলে দিয়েছে। কেন্দ্রের শ্রম কোডের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “৮ ঘণ্টার পরিবর্তে ১২ ঘণ্টা কাজ করানো শ্রমিক সংগঠনের অধিকার খর্ব করার চেষ্টা। শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক তিরুপতিতে কেন্দ্রীয় শ্রম সম্মেলনে জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যে ৮ ঘণ্টা কাজের অধিকার বজায় থাকবে। তার বেশি কাজ করলে অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে।” এসবিএসটিসির ঠিকা কর্মীদের পিএফ-সহ অন্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না, ঠিকাদারের কাছে পে-স্লিপ না পেলে তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করার দাবি তুলতে হবে বলেও জানান তিনি। ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার ডাকও দেন।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুরের শিল্প-কারখানায় চাঁদার জুলুম নিয়ে সরব হয়েছেন। সম্প্রতি দুর্গাপুরে চাঁদা চাওয়ার একাধিক অভিযোগ প্রসঙ্গে এ দিন ঋতব্রত বলেন, “চাঁদা নেওয়ার নিশ্চিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সম্প্রতি দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টের এক ঠিকা কর্মী ‘চাঁদা’ দিতে না চাওয়ায় কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন। জেলা সভাপতি অভিজিতের হস্তক্ষেপে তিনি কাজ ফিরে পান। ঋতব্রত বলেন, “ওই ঠিকা কর্মী প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। প্রশাসন তদন্ত করছে। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত জানার পরেই আমরা এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব।”
বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন থেকে বলছেন সরকারি জায়গা জবরদখল করা যাবে না। সরকারি জায়গায় রাজনৈতিক কাজকর্ম করা যাবে না। অথচ, দুর্গাপুরে ঠিক উল্টোটা হল। আসলে সরকারি জমি দখল করে গা জোয়ারি করা অভ্যাস করে ফেলেছে ওরা।” ঋতব্রত বলেন, “বিজেপি কী বলছে সেটা গুরুত্বহীন। শ্রমিক সংগঠন নিয়ে বিজেপির যে কোনও ধারণা নেই, সেটা বোঝা যাচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনের পর এ সব হল হতাশার বহিঃপ্রকাশ।”