Bardhaman

TMC: প্রায় চার দশকের বাম দুর্গে তৃণমূলের হানা, আমরাসোঁতা পঞ্চায়েতের দখল কি সময়ের অপেক্ষা

দলবদলকারী বাম নেতাদের পাল্টা দাবি, উন্নয়নের অভাবেই জোড়াফুল শিবিরে গিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২১ ২২:৩৬
Share:

আমরাসোঁতা পঞ্চায়েতে এ বার পালাবদল হতে পারে বলে দাবি তৃণমূলের। —নিজস্ব চিত্র।

প্রায় চার দশক ধরে বামফ্রন্টের দখলে থাকা পশ্চিম বর্ধমানের আমরাসোঁতা পঞ্চায়েতের রাশ চলে যেতে পারে তৃণমূলের হাতে। পাঁচ সদস্যের ওই পঞ্চায়েতের বাম সদস্যের দু’জন ইতিমধ্যেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আর এক জন শনিবার শাসকদলে নাম লেখাতে পারেন। ফলে আমরাসোঁতা পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে আসা কেবল সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করা হচ্ছে। দলবদলকারী বাম নেতাদের পাল্টা দাবি, উন্নয়নের অভাবেই জোড়াফুল শিবিরে গিয়েছেন তাঁরা। যদিও জেলার বাম নেতৃত্বের দাবি, অর্থের লোভেই এই দলবদল।

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ১৯৮৩ সাল থেকে এই পঞ্চায়েত বামফ্রন্টের দখলে রয়েছে। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে গোটা জেলার মধ্যে একমাত্র আমরাসোঁতাই দখলে রাখতে পেরেছিল বামফ্রন্ট। পাঁচ সদস্যের এই পঞ্চায়েতের চারটিতে বামফ্রন্ট (সিপিএম তিনটি এবং সিপিআই একটি আসন) জিতেছিল। একটি আসন দখল করে তৃণমূল। তবে উপপ্রধান তথা সিপিআইয়ের মুন্নি বেগম এবং সিপিএমের সীমা বাউরি ইতিমধ্যেই তৃণমূলের যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। পঞ্চায়েত প্রধান নীলেশ বাউরি শনিবার তৃণমূলে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন। ফলে আমরাসোঁতায় তৃণমূলের দখলে আসা একপ্রকার নিশ্চিত। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন দাসুও একই কথা বলেছেন। দাসু বলেন, “দু’জন ইতিমধ্যেই আমাদের দলে যোগদান করেছে। শনিবার আসানসোলের রবীন্দ্রভবনে যোগদান করবে নীলেশ। ইতিমধ্যে রানিগঞ্জ বিডিও-কে সে কথা জানানো হয়েছে। পাঁচ আসনের মধ্যে চারটিই তৃণমূলের হাতে আসবে। তাই এই পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে আসবে, তা বলা চলে। তবে কাগজেকলমে এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।”

Advertisement

বাপদাদার আমল থেকে সিপিএম করে আসা নীলেশ অবশ্য এ জন্য বাম নেতৃত্বের দিকেই অভিযোগের তির ছুড়েছেন। ইতিমধ্যে তৃণমূলে যোগদান করার জন্য আবেদন করেছেন তিনি। নীলেশের দাবি, “এই পঞ্চায়েত এলাকায় উন্নয়ন করতে হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করতে হবে। সে জন্যই দলবদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।” উন্নয়নের কাজে কোনও বাম নেতাকে পাশে পাননি বলেও অভিযোগ তাঁর। নীলেশের কথায়, “পঞ্চায়েত ভোটের দিন বোম-গুলি চলা বা অগ্নিসংযোগ, সব কিছুই হয়েছিল। তবে পঞ্চায়েত দখল করার জন্য সকলে একত্রিত হয়ে লড়াই করেছিলাম। তা সত্ত্বেও বামফ্রন্ট বা সিপিএম নেতৃত্ব সে ভাবে এই পঞ্চায়েতের পাশে ছিলেন না।”

যদিও নীলেশের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন রানিগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক তথা জেলা সিপিএমের নেতা রুনু দত্ত. তাঁর পাল্টা দাবি, “অর্থের লোভে দল ছাড়ল ওঁরা। যাঁরা অর্থের বিনিময়ে এ কাজ করেছেন, তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যে পঞ্চায়েত দখলে রাখার জন্য গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে লড়াই হয়েছিল, ইতিহাস গড়েছিলাম, তা এ ভাবে চলে গেল শুধু অর্থের জন্য। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ভিত্তিহিন।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement