জলপ্রকল্পের কৃতিত্ব নিয়ে টানাপড়েন

যদিও পুরসভার মেয়র পারিষদ (জল) পূর্ণশশী রায়ের বক্তব্য, ‘‘ওই যোজনার টাকা ভিক্ষা হিসেবে পাওয়া নয়। ওটা রাজ্য সরকারের অধিকার। রাজ্য থেকে যে রাজস্ব কেন্দ্রে যায়, তার একটা অংশ এই রাজ্যেও উন্নয়ন বাবদ খরচ করার কথা। প্রকল্প আমরাই বানাচ্ছি। ওরা শুধু কৃতিত্ব দাবি করতে পথে নেমেছে।’’ ‘‘রাজ্যের আর্থিক অনুদানে কুলটির জলপ্রকল্প তৈরি হচ্ছে’’, দাবি মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারিরও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কুলটি শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৪১
Share:

ফাইল চিত্র।

জলপ্রকল্পের কৃতিত্ব কার, তা নিয়ে রীতিমতো দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে বিজেপি-তৃণমূলে। কুলটির জলপ্রকল্প কেন্দ্রীয় সরকার ও সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের উদ্যোগেই রূপায়িত হচ্ছে দাবি করে শুক্রবার মিছিল ও পথসভার আয়োজন করল বিজেপির যুব সংগঠন ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, এ কৃতিত্ব রাজ্য সরকারেরই।
শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ নিয়ামতপুরের জিটি রোড লাগোয়া দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয় মোর্চার সদস্য, সমর্থকদের মিছিল। তা শেষ হয় চিত্তরঞ্জন রোড ও জিটি রোডের সংযোগ স্থলে। সেখানে মঞ্চ বানিয়ে পথসভাও হয়। কর্মসূচির শেষে বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই দাবি করেন, ‘‘এই জলপ্রকল্পের জন্য বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার ‘অমরুত যোজনা’ প্রকল্প থেকে প্রায় ৪৯ কোটি টাকা দিয়েছে। অথচ, আসানসোল পুরসভা কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদানের কথা উপেক্ষা করে নিজেরা জলপ্রকল্প তৈরির কৃতিত্ব দাবি করে চলেছে।’’

Advertisement

যদিও পুরসভার মেয়র পারিষদ (জল) পূর্ণশশী রায়ের বক্তব্য, ‘‘ওই যোজনার টাকা ভিক্ষা হিসেবে পাওয়া নয়। ওটা রাজ্য সরকারের অধিকার। রাজ্য থেকে যে রাজস্ব কেন্দ্রে যায়, তার একটা অংশ এই রাজ্যেও উন্নয়ন বাবদ খরচ করার কথা। প্রকল্প আমরাই বানাচ্ছি। ওরা শুধু কৃতিত্ব দাবি করতে পথে নেমেছে।’’ ‘‘রাজ্যের আর্থিক অনুদানে কুলটির জলপ্রকল্প তৈরি হচ্ছে’’, দাবি মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারিরও।

জলপ্রকল্প নিয়ে রাজনীতি কুলটিতে নতুন কিছু নয়। ২০০৬-এ প্রকল্প তৈরির তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু সেই সময়ে কে প্রকল্প তৈরি করবে তা নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয় এডিডিএ এবং সাবেক কুলটি পুরসভার। বিবাদ গড়ায় আদালত পর্যন্ত। কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদিত ১৩৩ কোটি টাকা ২০১৩-য় ফেরত চলে যায়। এর পরে ২০১৪-য় লোকসভা ভোটেও কুলটি বিধানসভা এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা, প্রকল্প না হওয়া ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রচারের অন্যতম বিষয়। তৃণমূল নেতৃত্ব জানান, সেই সময়ে প্রচারপর্বে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকল্প তৈরির প্রতিশ্রুতি দেন। এর পরে আসানসোল পুরসভা রাজ্যের পুর ও নগোরান্নায়ন দফতরের নির্দেশে ফের জলপ্রকল্পের জন্য বিস্তারিত বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করে। কেন্দ্রীয় সরকারের ওই যোজনা থেকে টাকা বরাদ্দের কথাও জানানো হয়।

Advertisement

এই প্রকল্পকে সামনে রেখে বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণবাবু বলেন, ‘‘আমরা মিথ্যাচার মানব না। প্রকল্প আসলে কারা তৈরি করছে, সেটা সাধারণ মানুষকে জানাবই।’’ এ বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্রবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘গুজবে কান দেবেন না।’’

আসানসোল পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী বছর জুনের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করার লক্ষ্য ধরা হয়েছিল। কিন্তু মার্চের মধ্যেই প্রকল্প থেকে জল সরবরাহ শুরু হবে বলে আশা পুরসভার।
এ দিন মোর্চার মিছিল জিটি রোডের মাঝ দিয়ে চলাচল করায় গাড়ির যাতায়াত বেশ কিছুক্ষণ থমকে যায়। চিত্তরঞ্জন ও জিটি রোডের সংযোগস্থলে মঞ্চ করে সভা করায় সেখানেও তীব্র যানজট
তৈরি হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement