নির্দেশ সার, গুটখা বিক্রি রমরমিয়েই

কমিশনারের বিজ্ঞপ্তি জারির পরেও বর্ধমান শহর জুড়ে কী ভাবে চলছে এই সব জিনিসের বিক্রি? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার যুক্তি, এর পিছনে দু’টি কারণ রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৪০
Share:

স্কুলের পাশেই গুটখার দোকান। বর্ধমান শহরে। —নিজস্ব চিত্র।

ফি বছর বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। কিন্তু তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য দফতর ন্যূনতম তৎপরতা দেখায় না বলে অভিযোগ। ৭ নভেম্বর রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের খাদ্য কমিশনার গোধুলি মুখোপাধ্যায় ফের এক বছরের জন্য তামাকজাত পানমশলা-গুটখা বিক্রি নিষিদ্ধ করেছেন। কিন্তু, কী ভাবে ওই নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করা যাবে, বিজ্ঞপ্তি জারির পরে দিন দশেক কেটে গেলেও তা ঠিক করা যায়নি বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই খবর।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কয়েক মাস আগে বর্ধমানের পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত, কাউন্সিলর খোকন দাসেরা শহরের বিসি রোডে এ নিয়ে অভিযান চালিয়েছিলেন। তার পর থেকে কিছু দিন ব্যবসায়ীরা ‘গোপনে’ গুটখা-পানমশলা বিক্রি করছিলেন বলে খবর। কিন্তু এই মুহূর্তে সে সব আড়াল-আবডালের আর কোনও বালাই নেই বলে শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ। এমনকী স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনেও প্রকাশ্যে চলছে গুটখা-পানমশলা বিক্রি। বেশির ভাগ দোকানদারের দাবি, মাঝে-মাঝে অভিযান হবে। কিছু দিন গেলেই যে কে সেই অবস্থা। তাই নিয়ম-নীতিকে বুড়ো আঙুল। শুধু রাস্তা নয়, স্বাস্থ্য দফতরের ভিতরেও গুটখা-পানমশলা ব্যবহার হচ্ছে বলে একটি সূত্রের দাবি।

পূর্ব বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় অবশ্য বলেন, “আমরা দ্রুত পুলিশ-পুরসভাকে নিয়ে বৈঠক করব। তার পরেই গুটখা-পানমশলা বন্ধের জন্য অভিযান চালানো হবে।” ‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস (‌প্রোহিবিশন অ্যান্ড রেস্ট্রিকশন অন সেলস) রেগুলেশন ২০১১ আইনে এ রাজ্যে ওই সামগ্রী নিষিদ্ধ করা হয়। ফি বছর এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হলেও নজরদারির অভাবে আইন খাতায়-কলমেই রয়ে গিয়েছে।

Advertisement

কিন্তু কমিশনারের বিজ্ঞপ্তি জারির পরেও বর্ধমান শহর জুড়ে কী ভাবে চলছে এই সব জিনিসের বিক্রি? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার যুক্তি, এর পিছনে দু’টি কারণ রয়েছে। প্রথমত, রাস্তায় নেমে নিয়মিত নজরদারি চালানোর পরিকাঠামো নেই। দ্বিতীয়ত, সে জন্য পুলিশ ও পুরসভার মাধ্যমে নিয়ম প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু সেক্ষেত্রেও কর্মীর অভাব রয়েছে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানায়, এ দেশে প্রতি বছর ক্যানসারে যত মানুষ আক্রান্ত হন, তার মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রেই দায়ী তামাক। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সূত্রেও জানা যায়, বহির্বিভাগে আসা রোগীদের মধ্যে ৩৫-৪০ শতাংশ মুখের ক্যানসারে আক্রান্ত। ওই হাসপাতালের এক ক্যানসার বিশেষজ্ঞ বলেন, “স্বাস্থ্য দফতর-সহ সব দফতর এক যোগে নিয়মের প্রয়োগ করলে বর্ধমানেই কয়েক বছর পরে মুখে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেকটাই কমবে।”

কিন্তু তা আদৌ হবে কি না, সংশয়ে সব পক্ষই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement