—প্রতীকী ছবি।
নর্দমার নোংরা জল পরিশোধনের জন্য দুর্গাপুরে তিনটি পরিশোধনকেন্দ্র তৈরি করা হবে। খুব দ্রুত সেই কাজ শুরু হবে বলে জানান দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) প্রভাত চট্টোপাধ্যায়।
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের চাষিপাড়া, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের নমো সগড়ভাঙা ও পুরসভা এলাকার বাইরে শঙ্করপুরে পরিশোধনকেন্দ্র তিনটি তৈরি করা হবে। ২০২১-র মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আশা করছেন পুরসভার কর্তারা। মেয়র দিলীপ অগস্তি জানান, প্রকল্প রূপায়ণে খরচ হবে প্রায় ২৮৭ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকা।
‘ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা’ প্রকল্প সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর শহরের নিকাশি বর্জ্য জল তামলা-সহ বিভিন্ন নালা দিয়ে বয়ে গিয়ে দামোদরে পড়ে। তামলা নালাটি শহরের ভিতর দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে গিয়ে দামোদরে পড়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, তামলা নালার জলের রং দেখেই বোঝা যায়, সেই জলে দূষণের মাত্রা কেমন। এর ফলে দামোদরের জলও দূষিত হচ্ছে। সেই দূষিত জল মেশে গঙ্গা বা ভাগীরথীতে। তা রোধ করতেই এই পরিকল্পনা।
বর্জ্য জল পরিশোধনের ব্যবস্থা করতে প্রথম পর্যায়ে তিনটি পরিশোধনকেন্দ্র গড়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। তার মধ্যে একটি সারা দিনে ৩০ মিলিয়ন লিটার ও বাকি দু’টি ২৫ মিলিয়ন লিটার করে নোংরা জল পরিশোধন করতে পারবে। এর ফলে শহরের মোট ৫ কিলোমিটার ৭৩০ মিটার নিকাশি নালার জল পরিশোধন করা সম্ভব হবে বলে পুরসভা সূত্রে জানা যায়।
দামোদর থেকেই জল নিয়ে তা পরিশোধন করে পানীয় জল হিসেবে সরবরাহ করা হয় দুর্গাপুর শহরে। কিন্তু পরিশোধনের পরেও সেই জল খাওয়ার যোগ্য কি না, তা নিয়ে বছর দশেক আগে দুর্গাপুর পরিদর্শনে এসে প্রশ্ন তুলেছিল খড়্গপুর আইআইটি-র একটি সমীক্ষক দল। কিন্তু আগেই নিকাশি নালার জল পরিশোধন করে তার পরে দামোদরে ছাড়লে এমনিতেই দূষণ কমে যাবে। তার উপরে ফের তা পরিশোধন করে পানীয় জল হিসেবে সরবরাহ করলে দূষণের হার সার্বিক ভাবে কমবে বলে মনে করছেন শহরবাসী।
মেয়র পারিষদ প্রভাতবাবু বলেন, ‘‘শহর ‘গ্রিন’ ও ‘ক্লিন’ রাখতে হবে। তার জন্য শহরের সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি নিকাশি নালার জলও শোধন করতে হবে। তবেই সার্বিক ভাবে শহর সুন্দর হয়ে উঠবে।’’ প্রাথমিক পর্যায়ে তিনটি পরিশোধন কেন্দ্র গড়ার কাজ সম্পন্ন হলে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে আরও কয়েকটি পরিশোধন কেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।