কাটোয়ায় কার্তিক পুজোর প্রস্তুতি। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
ঐতিহ্যবাহী কার্তিক পুজোর শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত কাটোয়া। কাল, শুক্রবার থেকে চার দিনের উৎসবে মাতবে শহর। এ বছর দেব সেনাপতির আরাধনায় নজর কাড়তে কোথাও গড়া হয়েছে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরের আদলে মণ্ডপ, আবার কোথাও লালকেল্লা। কেরলের মন্দিরও তুলে আনা হয়েছে মণ্ডপে। কোনও পুজো মণ্ডপের থিম সাজানো হয়েছে আন্দামানের মানুষের জীবনযাত্রা দিয়ে। সব মিলিয়ে, জমজমাট কার্তিক পুজোর বার্তা দিচ্ছেন পুজো উদ্যোক্তারা।
এ বছর শহরের ঝঙ্কার ক্লাব সব থেকে বড় বাজেটের পুজো উপহার দিতে চলেছে বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। একটি বড় পুকুরে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরের আদলে মণ্ডপ সাজিয়েছেন ক্লাব সদস্যেরা। এই ক্লাব বরাবরই মণ্ডপ গড়ে পুজোর পাশাপাশি শোভাযাত্রাতেও যোগ দিয়ে থাকে। এ বছর ৫-৭ রকমের বাজনা ও চোখধাঁধানো আলোকসজ্জার সঙ্গে শোভাযাত্রায় যোগ দেওয়া হবে দেবে বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। ক্লাবের সম্পাদক কালীচরণ চট্টরাজের কথায়, “প্রতি বছরই আমরা দেব সেনাপতির আরাধনায় দর্শকদের সেরা উপহার দেওয়ার চেষ্টা করে থাকি। এ বছর প্রায় ২০ লক্ষ টাকায় আয়োজন করেছি। কাটোয়ায় বসেই মানুষ স্বর্ণমন্দির দেখে ফেলার আনন্দ নিতে পারেন।’’
পাবনা কলোনির দেশবন্ধু বয়েজ ক্লাব এ বছর কেরলের এক বড় মন্দিরের আদলে মণ্ডপ গড়েছে। বাঁশ, প্লাই ও স্পঞ্জ দিয়ে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। ইদাঁরাপাড়ে ইয়ংস্টাফ ক্লাব এ বছর লালকেল্লা তুলে আনছে মণ্ডপে। ক্লাবের সম্পাদক অমিত দেবনাথ বলেন, “আমাদের দেশের গর্ব লালকেল্লা। অনেক ইতিহাস জড়িয়ে আছে। অনেকেই দিল্লিতে লালকেল্লা দেখতে যান। এ বছর আমরা কাটোয়াতেই লালকেল্লা তুলে এনেছি। আমাদের আয়োজন দেখতে লম্বা লাইন পড়ে যাবে।’’ তার পাশেই গড়ে উঠছে মশারি দিয়ে কাল্পনিক মন্দিরের আদলে মণ্ডপ। ভিতরে থাকবে দেব সেনাপতির বড় মূর্তি। কাছারি রোডের জনকল্যাণ ক্লাব বড় মণ্ডপ সাজিয়ে আন্দামানের মানুষের জীবনযাত্রাকে থিম করছে। সার্কাস ময়দানের ইউনিক ক্লাব মণ্ডপ সাজিয়েছে কাঠের পুতুলের দেশের নানা কথা দিয়ে। বড় বড় কাঠের পুতুল দর্শনার্থীদের আনন্দ দেবে বলে দাবি পুজো উদ্যোক্তাদের।
কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কার্তিক পুজো কাটোয়ার ঐতিহ্য। এ বছরও
প্রতিটি পুজো কমিটি অক্লান্ত পরিশ্রম করে সাধ্যমতো আয়োজনে আরাধনায় মেতে উঠেছে। এই লোক উৎসব
সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করার জন্য
প্রশাসনের নানা নির্দেশ মেনে চলার অনুরোধ জানাই।’’