প্রতীকী ছবি
সরকারের তরফে জেলায় যে পরিমাণ ধান কেনার লক্ষ্যমাত্র ছিল, তা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পূরণ হবে বলে দাবি জেলা খাদ্য দফতরের। কিন্তু জেলার বহু চাষির দাবি, এখনও তাঁদের কাছে অনেক ধান মজুত আছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলে তাঁরা সরকারি দরে ধান বিক্রি করতে পারবেন না। ফলে, সমস্যা হবে। পাশাপাশি, সমস্যার কথা জানিয়েছেন চালকল মালিকেরাও।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, কাঁকসা ব্লকের বেশির ভাগ চাষিই এ বার বোরো ধানের চাষ করেছিলেন। অনেকে ইতিমধ্যেই সরকারি দরে ধান বিক্রি করেছেন। জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর সরকার জেলার ক্ষেত্রে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে ৬০,৫০০ টন। জেলার ব্লক ‘কৃষক বাজার’ ও ‘ডিরেক্ট পারচেজ়িং সেন্টার’ ও সমবায় সমিতিগুলির মাধ্যমে সরকারি দরে ধান কেনার কাজ শুরু হয় গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে। তা চলবে চলতি বছরের অগস্ট পর্যন্ত। ইতিমধ্যেই প্রায় ৫৮ হাজার টন ধান কেনা হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু জেলার চাষিদের একাংশের দাবি, সরকারের ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা প্রায় পূরণ হয়ে গেলেও, বহু চাষির বাড়িতেই এখনও ধান মজুত রয়েছে। বিশেষত, কাঁকসায় এমন উদাহরণ অনেক রয়েছে। চাষিরা জানান, বোরো ধানের চাষ ভাল হওয়ায় অনেকের কাছে সেই ধান মজুত রয়েছে। অভিযোগ, কৃষক বাজারে ধান কেনার জন্য নাম নথিভুক্ত করা থাকলেও ধান বিক্রির তারিখ মিলছে না। তেলিপাড়ার নিতাই গড়াই, পলাশ রায়েরা বলেন, ‘‘বাড়িতে ধান মজুত রয়েছে। সরকারি দরে বিক্রি না করতে পারলে সমস্যায় পড়ব।’’ কেন সমস্যা? ওই চাষিরা জানান, সরকার এক কুইন্টাল ধান কিনছে ১,৮৩৫ টাকা দরে। উল্টো দিকে, ফড়েদের মাধ্যমে খোলা বাজারে ওই পরিমাণ ধানের দর গুণমান অনুযায়ী, ১,২০০ থেকে ১,৫০০ টাকার মতো।
আবার লক্ষ্যমাত্রা দ্রুত পূরণ হয়ে গেলে সমস্যায় পড়তে হবে চালকল মালিকদেরও। জেলায় ছ’টি চালকল সরকারের কাছে ধান কেনার সঙ্গে যুক্ত। চালকল মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, খাদ্য দফতর থেকে যে পরিমাণ ধান দেওয়া হয়েছিল, তার বেশির ভাগই চাল করে খাদ্য দফতরে দেওয়া হয়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে যে পরিমাণ ধান জমা রয়েছে, তাতে দিন পনেরো চালকল চালানো সম্ভব। চালকল মালিক সরোজ চক্রবর্তী, গৌতম ভট্টাচার্যেরা বলেন, ‘‘দফতরের তরফে লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো না হলে, আমাদের চালকল বন্ধ করতে হবে।’’
বিষয়টি নিয়ে জেলা খাদ্য নিয়ামক সঞ্জীব হালদারের দাবি, ‘‘এ বছর প্রায় ১২ হাজার ৮৯ জন চাষির কাছ থেকে সরাসরি ধান কিনেছে দফতর। ফলে, চাষিরা অনেকটাই উপকৃত হয়েছেন। ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা প্রায় পূরণ হয়ে গিয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানোর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। তবে সব চাষিই ধান বিক্রি করতে পারবেন।’’