চৌধুরী গোলাম মোস্তাফা হোসেন।—ফাইল চিত্র।
অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছেন রায়না ১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ চৌধুরী গোলাম মোস্তাফা হোসেন (৪২), প্রাথমিক তদন্তের পরে এমনই অনুমান পুলিশের। পুলিশ সূত্রের দাবি, বেশ কিছু দিন ধরে পেশায় আইনজীবী মোস্তাফা হোসেন অবসাদে ভুগছিলেন। চিকিৎসাও করিয়েছিলেন।
সোমবার বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ রায়না ১ পঞ্চায়েত সমিতির দোতলায় নিজের ঘরের সামনে বারান্দায় ওই কর্মাধ্যক্ষের ঝুলন্ত দেহ মেলে। মঙ্গলবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না-তদন্ত হয়। সেখানে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। দেহ আনা হয় বর্ধমান আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের সামনে। দুপুর ২টো নাগাদ জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্ত, রায়নার বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুইরা দেহ নিয়ে রায়নার আউশারা গ্রামের বাড়িতে পৌঁছন। বিকেলে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
তৃণমূল ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের পরে মোস্তাফা হোসেন রাজনীতিতে পা রাখেন। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে তৎকালীন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নেপাল ঘোড়ুইয়ের সঙ্গে পেশাগত কারণে যোগাযোগ বাড়ে তাঁর। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে রায়নায় নেপালবাবু প্রার্থী হলে, তিনি তাঁর হয়ে কাজ করেন। নেপালবাবুর নির্বাচনী এজেন্ট উত্তমবাবু মঙ্গলবার বলেন, ‘‘ভোটের আগে প্রচণ্ড পরিশ্রম করতে দেখেছিলাম দু’জনকে। সে সব কথা এখন খুব মনে পড়ছে।’’ তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, নেপালবাবুর উদ্যোগেই পঞ্চায়েত সমিতিতে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পদ পান মোস্তাফা হোসেন। যদিও এ নিয়ে নেপালবাবু কিছু বলতে রাজি হননি।
পেশার সূত্রে বর্ধমানের সরাইটিকরে থাকতেন মোস্তাফা হোসেন। পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের একাংশের দাবি, গত এক-দেড় মাস দফতরে কম আসছিলেন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। নানা সভা-সমিতিতেও তাঁকে দেখা যাচ্ছিল না। ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ শৈলেন সাঁইয়ের দাবি, ‘‘বর্ধমান থেকে কার্যালয়ে আসার পথে নারুগ্রামে দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন। ডান হাতে আঘাত লেগেছিল। সোমবার দুপুরে এ নিয়ে কথা বলার ফাঁকে একটি রাস্তার কাজের জন্য আবেদন করি। আমাদের সঙ্গে একটি বৈঠকে যাওয়ার কথা ছিল। আমাদের এগোতে বলেছিলেন।’’
পুলিশ জানায়, তদন্তে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। ওষুধও খাচ্ছিলেন। তার জেরে আত্মঘাতী হতে পারেন বলে তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান। এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে কিছু ধারণা মিলবে।’’