এই মিছিলটিই আটকায় পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
স্থানীয়দের বঞ্চিত করে বাইরে থেকে লোক এনে কাজ করানো হচ্ছে। দুর্গাপুরের সগড়ভাঙার গ্রাফাইটের ইলেক্ট্রোড ও কার্বনের নানা সামগ্রী উৎপাদনকারী একটি বেসরকারি কারখানার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই এই অভিযোগ তুলে আন্দোলন করছেন দুর্গাপুরের ২৮ ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষজন। মঙ্গলবার তৃণমূলের নেতৃত্বে ফের তাঁরা মিছিল করলেন। তবে পুলিশ এ দিন মিছিল আটকে দেয়। তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন তৃণমূল কর্মীরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কারখানায় স্থানীয়দের নিয়োগের দাবিতে মাঝেমধ্যেই আন্দোলন করেন এলাকার যুবকেরা। ২০২০-র সেপ্টেম্বরে এবং ২০২১-এর জানুয়ারিতে ‘বহিরাগত’ অভিযোগে বেশ কয়েক জনকে কারখানা থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। স্থানীয়দের নিয়োগের দাবিতে তৃণমূলের নেতৃত্বে স্থানীয়রা ২১ দিন ধরে কারখানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেন। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে বিক্ষোভ ওঠে।
মঙ্গলবার চাকরির দাবিতে ২৮ ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মীরা স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশকে নিয়ে কারখানার উদ্দেশে সগড়ভাঙা মাঝের মোড় এলাকা থেকে মিছিল শুরু করেন। দলের পতাকা নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। কোকআভেন থানার পুলিশ এসে শুরুতেই মিছিল আটকে দেয়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে ঘিরে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। তৃণমূল কর্মী সুরজিৎ দাস বলেন, “২৮ ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় বেকার যুবকদের চাকরির দাবিতে আমরা মিছিল করছিলাম। কিন্তু পুলিশ আটকে দেয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দুর্গাপুরেরে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে স্থানীয় বেকারদের নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তবুও আমরা কাজ পাচ্ছি না।”
মিছিলে যোগ দেওয়া লোকজনের আরও অভিযোগ, কারখানার দূষণ ভোগ করছেন তাঁরা। রাস্তা দিয়ে কারখানার গাড়ি যাতায়াতে ধুলো উড়ছে। গাড়ির চাপে রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। সেই সব সমস্যা তাঁরা ভোগ করছেন, অথচ কাজ করানোর সময় বাইরে থেকে লোক আনা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি-ও। বিজেপির অন্যতম জেলা সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূলের পতাকা নিয়ে এলাকার মানুষ আন্দোলন করছিলেন। নায্য দাবিতেই এই আন্দোলন। পুলিশ তাঁদের আটকে দিচ্ছে। এর থেকে লজ্জা আর কিছু হতে পারে না। আবার উল্টো দিকে, টাকার বিনিময়ে বহিরাগতদের কাজে লাগাচ্ছেন শাসক দলেরই একাংশ।” তৃণমূল নেতা মৃগেন্দ্রনাথ পাল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, “কী ঘটেছে, তা জানি না। তবে, আমাদের কেউ কোনও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন।”
এ দিকে, আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটে সূত্রে জানা গিয়েছে, মিছিলের আগাম অনুমতি না থাকায়, পদক্ষেপ করা হয়। বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধি কারখানায় গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার এক আধিকারিকের দাবি, ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।