মৃত কিশোরের মা। নিজস্ব চিত্র
স্কুলে না গিয়ে দামোদরের পাড়ে ঘুরতে গিয়েছিল দুই বন্ধু। স্নান করে ওঠার সময়ে তলিয়ে যায় দু’জনেই। এক জনকে বাঁচানো গেলেও মারা গিয়েছে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র দেবজিৎ দাস (১৫)।
পুলিশ জানায়, বর্ধমানের কাঞ্চননগরের খর্গেশ্বরপল্লি এলাকার বাসিন্দা দেবজিৎ রথতলা মনোহর দাস উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল। এ দিন দুপুরে বন্ধু কৌশিক অধিকারীর সঙ্গে খণ্ডঘোষের গৈতানপুর এলাকায় গিয়েছিল সে। সেও এই স্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়া। বাড়িও পাশের পাড়াতেই।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দুপুরে দুই কিশোরকেই স্নান করতে দেখেন কয়েকজন। কিছুক্ষণ পরে কৌশিকের চিৎকারে লোকজন জড়ো হয় ওই এলাকায়। তাঁরাই উদ্ধার করেন দু’জনকে। পরে বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডাক্তারেরা মৃত বলে জানান দেবজিৎকে। এ দিন সন্ধ্যায় খর্গেশ্বরপল্লির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কান্নার রোল পড়েছে। দেবজিতের মা সমিতা দাস কোনও কথা বলতে পারেননি। বাবা পুলক দাস বলেন, ‘‘সকালে কাজে বেরনোর সময়ে দেখলাম ছেলে স্কুল যাচ্ছে। বিকালে খবর এল, দামোদরে চরে এই ঘটনা। কী করে কী হল, কিছুই বুঝতে পারছি না।’’
কৌশিক জানায়, এ দিন স্কুলে না গিয়ে দামোদরের পাড়ে ওই এলাকায় গিয়েছিল তারা। আগেও অনেকবার গিয়েছে। তার দাবি, দু’জনে স্নান করে উঠে আসার পরে দেবজিতের গায়ে বালি লেগেছিল বলে সে একাই ফের বালি ধুতে নদীতে নামে। তখনই বিপত্তি ঘটে। কৌশিকের চিৎকারে মাঝিরা এসে দেবজিতকে উদ্ধার করেন। কৌশিকের দাবি, বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে সেও তলিয়ে যাচ্ছিল। মাঝিরা তাকে টেনে তোলেন।
রথতলা মনোহর দাস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অশোককুমার দে জানান, বিষয়টি শুনেছেন তিনি। ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক শ্রীজীব কুমার লাহার দাবি, দেবজিৎ মাঝেমধ্যেই স্কুল কামাই করত। এ নিয়ে অভিভাবকদের স্কুলে ডেকে সতর্কও করা হয়েছিল। কিন্তু এই ধরনের ঘটনা ঘটে যাবে ভাবেননি কেউ।