মেমারিতে সুজাতা।নিজস্ব চিত্র।
দিন তিনেক আগেই দেওয়াল দখল নিয়ে হাটকালনা পঞ্চায়েতের তালবোনা এলাকায় বিজেপি তৃণমূলের গোলমাল বেধেছিল। প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথ নামে দলের এক তৃণমূল কর্মীকে মারধরেরও অভিযোগ ওঠে। বুধবার বিকেলে ওই এলাকাতেই প্রতিবাদ সভা করল তৃণমূল। মেমারির সাতগেছিয়াতেও বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়ের সভার পাল্টা হিসেবে এ দিন সভা করে তৃণমূল।
দুই সভাতেই দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের সঙ্গে ছিলেন সদ্য তৃণমূলে আসা সুজাতা মণ্ডল খাঁ। কালনায় মঞ্চের সামনে সাংসদ তহবিলে তৈরি হাইমাস্ট আলোর স্তম্ভে বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডলের নাম দেখেই সুজাতা বলেন, ‘‘ওই ল্যাম্পপোস্টটাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের দেওয়া। ২০১৪ সালে আপনারা ওঁকে সাংসদ করেছিলেন। ২০১৯-এ নেত্রীর আশীর্বাদে আবার নির্বাচিত হন। কিন্তু দেড় বছরের মাথায় আপনাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেন।’’ তার পরেই সাংসদের প্রতি তিনি ‘অসম্মানজনক’ মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ। যদিও পরে সুজাতার দাবি, ‘‘ওঁর নিকৃষ্ট মানসিকতার জন্য মেয়ের বয়সী এক জন এ কথা বলতে বাধ্য হল।’’
সুনীলবাবুর কটাক্ষ, ‘‘ওরা রাজনীতির লোক নয়। যেমন শেখাচ্ছে তেমন বলছে। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছি, ওদের যেন সুবুদ্ধি হয়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি ওকে বোনের মতো স্নেহ করি। সৌমিত্রর বউ হিসেবে আমাকে প্রণাম করেছে, খাবার বেড়ে দিয়েছে। সে যদি গালিগালাজ করে, আশীর্বাদ বলেই মনে করছি।’’
এ দিন সভায় ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডু, কালনা শহর সভাপতি দেবপ্রসাদ বাগ, রাজ্য কমিটির শ্যামল দাঁ-ও। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখেছি, পুলিশের অনুমতি নিয়েই আমাদের কর্মীরা দেওয়াল লিখছিলেন এলাকায়। অথচ, হামলা হল। এলাকার মানুষ শান্তিপ্রিয়। তবে ওঁরা ঠিক সময়ে জবাব দেবেন।’’ দেবপ্রসাদবাবুর দাবি, ‘‘কর্মীরা বিশৃঙ্খলা চাননি বলে, অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে বারবার তাঁরা মার খাবেন না।’’
সাতগেছিয়ার সভায় জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ, জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি রাসবিহারী হালদার, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলাম, অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীরাও ছিলেন। সভার মূল উদ্যোক্তা, মেমারি ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মহম্মদ ইসমাইলের দাবি, ‘‘সভাস্থল ছাড়িয়ে রাস্তায় কয়েকহাজার মানুষ দাঁড়িয়ে ছিলেন। মানুষ যে আমাদের সঙ্গে রয়েছেন, এই সভা সেটাই প্রমাণ করে।’’ যদিও বিজেপির সাংগঠনিক জেলার (কাটোয়া)অন্যতম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ পোদ্দারের কটাক্ষ, ‘‘সভার শেষ পর্যন্ত মঞ্চের ডান দিক পুরো ফাঁকা ছিল। ধরেবেঁধে লোক এনেও সভা ভরাতে পারেনি।’’