School fee

ফি নিয়ে অশান্তি, অবরোধে ছাত্রীরা

ওই স্কুলে শুধু একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পঠন-পাঠন হয়। এ দিন ছাত্রীরা এসেছিলেন উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণ করার জন্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৪৪
Share:

চলছে অবরোধ। নিজস্ব চিত্র

ফি নিয়ে বিক্ষোভের জেরে সোমবার সকালে উত্তেজনা ছড়াল দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের সিভি রমন রোড লাগোয়া একটি বেসরকারি গার্লস স্কুলে। পুলিশ কয়েকজন অভিভাবককে আটক করলে, পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ছাত্রীদের কয়েকজন স্কুলের সামনের রাস্তায় বসে অবরোধ শুরু করেন। পরে পুলিশ তাঁদের তুলে দেয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, আদালতের নির্দেশ মেনেই তাঁরা যা করার করছেন। কোনও অতিরিক্ত ফি নেওয়া হয়নি।

Advertisement

ওই স্কুলে শুধু একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পঠন-পাঠন হয়। এ দিন ছাত্রীরা এসেছিলেন উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণ করার জন্য। এসেছিলেন অভিভাবকদেরও অনেকে। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁদের যাবতীয় ফি মিটিয়ে দিতে বলেন। অভিভাবকেরা জানান, তাঁরা টিউশন ফি দিতে রাজি। কিন্তু ভর্তি ফি দেবেন না। তাঁদের দাবি, আদালতের নির্দেশে ভর্তি ফি-সহ অতিরিক্ত ফি নেওয়া যাবে না। করোনা-অতিমারির জেরে তাঁদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। তাই আগের মতো সব ফি তাঁরা দিতে পারবেন না। গেটের বাইরে থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বচসা শুরু হয় তাঁদের। এর পরেই অভিভাবকদের একাংশ স্কুলের ভিতরে ঢুকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।

স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, স্কুলের এক পুরুষ ও মহিলা কর্মীর গায়ে হাত তোলা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে কয়েকজন অভিভাবককে গাড়িতে তুলে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ জানায়, আদালতের নির্দেশ মানতে হবে। অভিভাবকদের যা জানানোর আদালতে জানাতে হবে। স্কুলে অশান্তি পাকানো চলবে না। প্রতিবাদে কয়েকজন ছাত্রী স্কুলের সামনের রাস্তায় বসে পড়েন। বন্ধ হয়ে যায় যাতায়াত। প্রায় ঘণ্টাখানেক পরে, পুলিশ তাঁদের সরিয়ে রাস্তা ফাঁকা করে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে স্কুলের সামনে দিনভর পুলিশি পাহারা ছিল।

Advertisement

দুর্গাপুরের অভিভাবক সংগঠনের তরফে মানিক দাস দাবি করেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ মানছেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল কর্তৃপক্ষ ভর্তি ফি না দিলে উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণ করতে দেবেন না বলে জানিয়েছেন।’’

স্কুলের অধ্যক্ষা অপরাজিতা ভট্টাচার্য জানান, আদালতের নির্দেশ মেনে সব ধরনের ফি-তে ২০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে। যাঁদের পুরো ফি দেওয়ার আর্থিক ক্ষমতা আছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম মানা হয়েছে। স্কুল চালানোর জন্য আলাদা কোনও আর্থিক সংস্থান নেই। অন্য স্কুলের তুলনায় এই স্কুলে টিউশন ফি কম। তাই ভর্তি ফি না নিলে, স্কুল চালানো যাবে না। তিনি বলেন, ‘‘স্কুল পরিচালন সমিতি এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই মতো নোটিস দেওয়া হয়েছে অভিভাবকদের। অধিকাংশ অভিভাবক ফি জমা দিলেও মুষ্টিমেয় কয়েকজন অভিভাবক জুলাই থেকে নানা অছিলায় অশান্তি করছেন। তাঁদের আবেদন করতে বলেছি। তা-ও করেননি। এ দিন তাঁদের হাতে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে আমাদের কর্মীদের।’’ হেনস্থার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিভাবকেরা।

এ দিকে, ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় আসেন দুর্গাপুর পূর্বের সিপিএম বিধায়ক সন্তোষ দেবরায়। তিনি বলেন, ‘‘স্কুল কর্তৃপক্ষ ভর্তি ফি বাবদ প্রায় পাঁচ হাজার টাকা বেশি দাবি করছেন। সেই টাকা না দিলে বাকি ফি নেবেন না বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এটা আদালতের নির্দেশকে উপেক্ষা করে একতরফা সিদ্ধান্ত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement