শিক্ষকের বদলি রুখতে বিক্ষোভ। শনিবার পূর্ব বর্ধমানের মানকরের উত্তর রাইপুর প্রাথমিক স্কুলে। ছবি: বিপ্লব ভট্টাচার্য।
স্যরের পথ আগলে দাঁড়িয়ে পড়ুয়ারা। মুখে একটাই কথা— “প্রিয় স্যরকে যেতে দেব না।” শনিবার পূর্ব বর্ধমানের বুদবুদের মানকরের উত্তর রাইপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক চন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের অন্য বিদ্যালয়ে বদলির নির্দেশ এসেছে। তা রুখতেই পড়ুয়া ও অভিভাবকদের বিক্ষোভ। তাঁদের দাবি, বিদ্যালয়ের উন্নতিতে চন্দ্রনাথের ভূমিকা অপরিসীম। শুক্রবার বুদবুদ চক্রের স্কুল শিক্ষা দফতরে স্যরের বদলি রুখতে আবেদনও জানিয়েছেন তাঁরা। চন্দ্রনাথও এই বিদ্যালয়েই থাকার আর্জি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দফতরে।
ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে ১০৫ পড়ুয়া ও চার জন শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন। বছর বারো আগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন মানকরের বাসিন্দা চন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। ২০২০ সালে তিনি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক হন। অভিভাবকদের দাবি, “এলাকার খুদেদের মধ্যে পড়াশোনার প্রতি ভালবাসা তৈরি করেছেন তিনি। বাচ্চাদের উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঠাতেও সাহায্য করেছেন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়েও বাচ্চাদের এখন থেকেই তিনি শেখান। স্কুলের স্বার্থেই তাঁকে যেতে দেওয়া যাবে না।”
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৪ মার্চ নতুন প্রধান শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশ আসে। তার পর থেকেই প্রিয় স্যরকে স্কুল থেকে ছাড়তে নারাজ পড়ুয়ারাও। তৃতীয় শ্রেণির জুহিতা পাল, অক্ষয় বাউরিরা বলে, “স্যর আমাদের খুব ভালবাসে। কেউ এক দিন স্কুলে না এলে বাড়িতে গিয়ে খোঁজ করেন। আমরা আমাদের প্রিয় স্যারকে ছাড়ব না।”
ভালবাসায় আপ্লুত চন্দ্রনাথবাবু জানান, প্রধান শিক্ষকের জন্য তিনি এই স্কুল-সহ আরও দু’টি বিদ্যালয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু এখানে অন্য শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। তাঁর কথায়, “নিজের বদলি রুখতে আমিও স্কুল শিক্ষা দফতরে আবেদন করেছি। সকলকে ছেড়ে আমিও যেতে চাই না।” স্কুল শিক্ষা দফতরের বুদবুদ চক্রের এসআই-এর ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযগ করা যায়নি।