অবিলম্বে নিয়োগের দাবী চাকরী হারানো প্রার্থীদের। — ফাইল চিত্র।
বেআইনি ভাবে নিয়োগের অভিযোগ ওঠার পর থেকে, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় এখনও পর্যন্ত ৬৪ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সে তালিকায় রয়েছেন আট জন শিক্ষক, ৩৩ জন শ্রেণি চতুর্থ (গ্রুপ ডি) এবং ২৩ জন তৃতীয় শ্রেণির (গ্রুপ সি) কর্মী। এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপান-উতোরের মধ্যে সব পক্ষেরই দাবি, শূন্য পদে নিয়োগের ব্যবস্থা হোক তাড়াতাড়ি। এরই মধ্যে, ছেলের চাকরি বাতিল হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আইএনটিটিইউসি-র এক জেলা নেতা।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা (মাধ্যমিক) মুখ্য বিদ্যালয় পরিদর্শক (ডিআই) সুনীতি সাঁপুই বলেন, “আদালতের নির্দেশে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এই জেলায় ৬৪ জনের চাকরি বাতিল করেছে।” নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির (এবিটিএ) জেলা সম্পাদক অমিতদ্যুতি ঘোষের দাবি, তাঁরা ২০১২ সাল থেকে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে আসছেন। আদালতের নির্দেশে চাকরি বাতিলের ঘটনায় তার সত্যতা প্রমাণ হল। অমিতদ্যুতির দাবি, দ্রুত রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩ লক্ষ শূন্য পদে নিয়োগ করা হোক। তা না হলে পঠনপাঠনে চূড়ান্ত অসুবিধা হবে। বিজেপি প্রভাবিত বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সঙ্ঘের তরফে চঞ্চল দাসেরও দাবি, ‘‘আদালতে রায়ে স্পষ্ট, রাজ্য সরকার কোন পথে চলছে। যোগ্যদের দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা করা হোক। তাতে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত হবে।’’
তৃণমূল কংগ্রেস মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি রাজীব মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘পুরো বিষয়টি বিচারাধীন, তাই কিছু বলার কিছু নেই। তবে আমরা চাই, চাকরি বাতিলের জেরে স্কুলগুলিতে যে সাময়িক সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে আদালতের নির্দেশ মেনে দ্রুত শূন্যপদে নিয়োগ করা হোক।’’
এরই মধ্যে, দুর্গাপুর প্রজেক্টস টাউনশিপ বয়েজ হাই স্কুলে করণিকের চাকরি করতেন আইএনটিটিইউসি জেলা সহ-সভাপতি সমীর মুখোপাধ্যায়ের ছেলে। বেনাচিতির একটি আবাসনের বাসিন্দা ওই যুবক ২০১৮ সালে স্কুলের চাকরিতে যোগ দেন। সমীরের দাবি, ২০১৫ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পরে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকবেন বলে ছেলে স্কুলের চাকরি বেছে নেন।সমীরের বক্তব্য, ‘‘ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মোটা মাইনের চাকরি ছেড়ে স্কুলে করণিকের কাজ বেছে নেওয়ার জন্য কেউ চাকরি চুরি করে? শিক্ষা দফতর যোগ্যতা পরীক্ষা করে চাকরি দিয়েছিল। এখন এই পরিস্থিতির জন্য কে দায়ী? দল ও সরকারের বিষয়টি দেখা উচিত।’’ স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন দিন ওই যুবক কাজে আসেননি।