Trade License

ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে চাপানউতোর

ট্রেড লাইসেন্স বানানো অথবা পুনর্নবীকরণ করা এখন অনেক সহজ। ব্যবসায়ীরা ঘরে বসেই অনলাইনে সে জন্য আবেদন জানাতে পারেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২০ ০২:০৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

সম্প্রতি রানিগঞ্জ বাজারে অভিযান চালানোর সময়ে এক ব্যবসায়ীর কাছে ট্রেড লাইসেন্স দেখতে চেয়েছিলেন জেলা প্রশাসনের টাস্ক ফোর্সের আধিকারিকেরা। দেখা যায়, ২০১৭-র পরে, ওই লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করেননি ওই ব্যবসায়ী। এর পরে, নির্দিষ্ট অঙ্কের জরিমানা করা হয় ওই ব্যবসায়ীকে। কিছু দিন পরে একই ছবি দেখা যায়, বরাকরের স্টেশন বাজারের সাত জন ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রেও। আধিকারিকদের মতে, এই প্রবণতা শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন বাজারে দেখা যাচ্ছে। তবে ব্যবসায়ী সংগঠনের অভিযোগ, করোনা-পরিস্থিতি এবং বিভিন্ন সরকারি দফতরে ঠিকমতো কাজ না হওয়ার জেরেই অনেকে লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করতে পারেননি।

Advertisement

টাস্ক ফোর্সের নেতৃত্বে থাকা কৃষি বিপণন দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর দিলীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া, ব্যবসা করা অপরাধ। ব্যবসা শুরুর প্রাথমিক শর্তই, ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। এটি না থাকার অর্থ, সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসার কারণে আনুমানিক ফি বছর কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এই লাইসেন্স দিতে পারে স্থানীয় পুরসভা ও স্থানীয় পঞ্চায়েত। এই লাইসেন্স পাওয়ার পরে দমকলের ছাড়পত্র, ফুড লাইসেন্স, রেগুলেটেড মার্কেটিং সার্টিফিকেট-সহ অন্য নানা অনুমতিপত্র মেলে। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়ীদের একাংশ ট্রেড লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করাচ্ছেন না বলে ফুড লাইসেন্স, রেগুলেটেড মার্কেটিং শংসাপত্র পাচ্ছেন না। দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আসানসোল ও দুর্গাপুর পুরসভার কাছ থেকে তাঁদের এলাকার ব্যবসায়ীদের নামের তালিকা চাওয়া হয়েছে। সেই তালিকা ধরে অভিযান চালিয়ে দেখা হবে কাদের ট্রেড লাইসেন্স নেই।’’

Advertisement

কিন্তু এই লাইসেন্সটি না থাকাকে ‘প্রবণতা’ বলে মানেননি ‘ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর কার্যকরী সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া, ব্যবসা করা উচিত নয় জানিয়েও তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘করোনা-পরিস্থিতিতে অনেক ব্যবসায়ীই ট্রেড লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করাতে পারেননি। ব্যবসা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি তৈরির জন্য তাঁদের অন্তত এক মাস সময় দেওয়া উচিত।’’ পাশাপাশি, রাজেন্দ্রবাবুর অভিযোগ, ‘‘গত প্রায় সাত মাস ধরে বিভিন্ন সরকারি অফিসে ঠিকমতো কাজ হচ্ছে না। অফিস বন্ধ থাকছে বা কর্মীরা আসছেন না। ফলে, নথি তৈরি করতে সময় লাগছে। পাশাপাশি, এখন উৎসবের মরসুম হওয়ায় দৈনন্দিন কাজকর্মে ঢিলেমি এসেছে। তাই এই মুহূর্তে নিয়ম কিছুটা শিথিল করা দরকার।’’ ওই বণিক সংগঠনটির আরও অভিযোগ, বারবার বিভিন্ন বাজারে টাস্ক ফোর্সের অভিযানের ফলে ব্যবসায়ীরা ভয় পাচ্ছেন। সাংগঠনিক ভাবে বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে আলোচনার প্রস্তাবও দিয়েছেন তাঁরা, জানান রাজেন্দ্রপ্রসাদবাবু।

যদিও প্রশাসনের তরফে কাজে ‘ঢিলেমি’র অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির দাবি, ‘‘ট্রেড লাইসেন্স বানানো অথবা পুনর্নবীকরণ করা এখন অনেক সহজ। ব্যবসায়ীরা ঘরে বসেই অনলাইনে সে জন্য আবেদন জানাতে পারেন। তার পরেও এই অনিয়ম মানা হবে না। আমরাও আলাদা ভাবে অভিযান চালাব।’’ তবে জেলার রেগুলেটেড মার্কেটিং কমিটির সচিব শুভ্রাংশু সিংহরায়ের আশ্বাস, ‘‘ট্রেড লাইসেন্স না রাখার প্রবণতা রুখতে জেলার বণিক সংগঠনগুলিকে নিয়ে বৈঠক আয়োজিত হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement