এখানেই হওয়ার কথা নতুন সেতু। নিজস্ব চিত্র।
পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়কের উপরে কাঁকসার দোমড়ার কাছে কুনুর নদীর উপরে সেতুটি ‘বিপজ্জনক’ বলে চিহ্নিত হয়েছে বছর খানেক আগে। সেখানে নতুন একটি সেতু তৈরির পরিকল্পনাও হয়েছিল। সেতু তৈরির দরপত্র ডেকে ঠিকাদারও নিয়োগ করা হয়। কিন্তু প্রস্তাবিত সেতুতে ওঠানামার রাস্তা (‘অ্যাপ্রোচ রোড’) তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। ফলে, পূর্ত দফতরের তরফে ‘বিপজ্জনক’ বলে চিহ্নিত পুরনো সেতু দিয়েই চলছে বালি ও পাথর বোঝাই ভারী গাড়ি এবং যাত্রিবাহী বাস। ব্লক প্রশাসনের দাবি, বেশ কিছু জমির মালিক বাইরে থাকায়, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। সে কারণেই থমকে রয়েছে জমি অধিগ্রহণের কাজ।
দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের সংযোগ রক্ষার অন্যতম মাধ্যম পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়ক। প্রতিদিন ওই রাস্তায় কয়েক হাজার ট্রাক ও ডাম্পার যাতায়াত করে। চলাচল করে সরকারি ও বেসরকারি অনেক বাস। ওই রাস্তার উপরেই কাঁকসার দোমড়ার কাছে কুনুর নদীর উপরে রয়েছে পুরনো একটি সেতু। প্রশাসন সূত্রের খবর, বছর চারেক আগে সেতুটিকে ‘বিপজ্জনক’ বলে চিহ্নিত করেছিল পূর্ত দফতর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চারেক আগে সেতুর একাংশ বসে গিয়েছিল। তখন বেশ কিছু দিন সেতু দিয়ে ভারী যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। সেতুটির আংশিক সংস্কারও হয়। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ওই সময় সিদ্ধান্ত হয়, কুনুরের উপরে নতুন একটি সেতু নির্মাণ
করা হবে।
পূর্ত দফতর (আসানসোল হাইওয়ে ডিভিশন) সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় বছর খানেক আগে ‘স্টেট হাইওয়ে ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন’ সেতু তৈরিতে উদ্যোগী হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ১৭ কোটি। তার পরে, নির্দিষ্ট সময়েই ডাকা হয় কাজের দরপত্র। এক ঠিকাদারকে কাজের বরাতও দেওয়া হয়। তার পরে, প্রায় এক বছর পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি।
সাধন ঘোষ ও সন্তোষ মণ্ডলের মতো দোমড়ার অনেক বাসিন্দার দাবি, ‘‘বিপজ্জনক বলে ঘোষিত পুরনো ওই সেতু দিয়েই রোজ যান চলাচল করছে। যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। শুনেছি, এক বছর আগে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। অথচ, এখনও সেতুর কাজই শুরু হল না!’’
কাঁকসা ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেতুর রাস্তা তৈরির জন্য জমি প্রয়োজন। সে জন্য অধিগ্রহণ করতে হবে কুনুরের দু’পাশে তেলিপাড়া ও দোমড়া মৌজার ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রায় আট একর জমি। কম-বেশি ৭০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ হয়ে গিয়েছে।
ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বেশ কিছু জমির মালিক অন্যত্র চলে গিয়েছেন। তাঁদের সকলকে এক সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে না। সে কারণে জমি অধিগ্রহণ এখনও সম্পূর্ণ করা যায়নি।’’ বিডিও (কাঁকসা) সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের আশ্বাস, ‘‘দ্রুত সব কিছু মিটে যাবে। তার পরেই, নতুন সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’’
পুরনো সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচলের ফলে দুর্ঘটনার যে আশঙ্কার কথা স্থানীয়েরা বলছেন, সে সম্পর্কে বিডিও-র বক্তব্য, ‘‘সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ হয়। পূর্ত দফতরও বিষয়টি নিয়ে সতর্ক।’’