(ডান দিক থেকে) বিডিও, বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও জয়েন্ট বিডিও। গলসি ২ ব্লক অফিসে, বৃহস্পতিবার। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে।
কেক কেটে, মোমবাতি জ্বালিয়ে তৃণমূল বিধায়কের জন্মদিন পালিত হল পূর্ব বর্ধমানের গলসি ২ ব্লক অফিসে। বৃহস্পতিবার ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় ছড়িয়ে পড়ে জন্মদিন পালনের বেশ কিছু ছবি (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার)। সরকারি কার্যালয়ে এমন অনুষ্ঠান কী ভাবে হল, বিতর্ক বেধেছে তা নিয়ে। বিজেপির অভিযোগ, সরকারি অফিসকে দলীয় কার্যালয় বানিয়ে ফেলেছে তৃণমূল। তৃণমূল অবশ্য এতে কোনও ‘আপত্তি’র কারণ দেখছে না। বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগের দাবি, ‘‘সকালে দরজা খুলে দেখি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যের শুভেচ্ছা নিয়ে দু’জন দাঁড়িয়ে আছেন। মুখ্যমন্ত্রী যদি তাঁর বিধানসভার সদস্যকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাতে পারেন, সেখানে বিডিও, এসডিও-সহ যে কেউ-ই শুভেচ্ছা জানাতে পারেন। এতে কোনও বিতর্ক নেই।’’ মহকুমাশাসক (বর্ধমান উত্তর) তীর্থঙ্কর বিশ্বাস বলেন, ‘‘ঠিক কী হয়েছে জানা নেই। অভিযোগ পেলে, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, খণ্ডঘোষের তৃণমূলের বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগের জন্মদিন ছিল বৃহস্পতিবার। সর্পদষ্ট হয়ে মৃত দুই পরিবারকে ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়া ও একটি খেলার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গলসি ২ ব্লকে গিয়েছিলেন তিনি। বিডিও-র ঘরেই রঙিন মোমবাতি জ্বালিয়ে, কেক কেটে তাঁর জন্মদিন পালিত হয়। মিষ্টিমুখও করা হয়। পঞ্চায়েত সমিতির তরফে সব আয়োজন করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। ছিলেন গলসি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বাসুদেব চৌধুরী, বিডিও সঞ্জীব সেন, তৃণমূলের গলসি ২ ব্লক সভাপতি সুজন মণ্ডলও।
বিজেপির জেলা সম্পাদক জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘বিডিও-র চেম্বার সরকারি পরিষেবা দেওয়ার ঘর। কিন্তু সেখানে তৃণমূলের বিধায়কের জন্মদিন উদ্যাপন করা হচ্ছে। আসলে ওঁরা সরকারি অফিসটাকে দলীয় কার্যলয় ভাবেন। এটা খুবই দুঃখজনক।’’ বিডিও অবশ্য বলেন, ‘‘উনি সরকারি অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। শুভেচ্ছা জানানোটা সৌজন্য বিনিময়।’’ বাসুদেববাবুর দাবি, ‘‘বিতর্ক যাঁরা করছেন, তাঁদের কোনও কাজ নেই। বিডিও-র ঘরে শুধু কেক কাটা, শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। তবে বিধায়ক যদি ব্লক অফিসে সরকারি অনুষ্ঠানে যান এবং তাঁকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানো হয়, তাতে দোষের কিছু নেই। জনপ্রতিনিধিকে শুভেচ্ছা জানানো যেতেই পারে। বিজেপি কী বলল, তাতে কিছু যায় আসে না আমাদের।’’