রক্তদাতাদের হাতে ছাতা তুলে দিচ্ছেন অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়। আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র।
রক্তদান শিবিরে কোনও রকম উপহার দেওয়া যাবে না। এই মর্মে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ দফতর বছর তিনেক আগে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি আসানসোলে আয়োজিত দু’টি রক্তদান শিবিরে উপস্থিত হয়ে রক্তদাতাদের ছাতা দিচ্ছেন পুর-প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়, এমন দৃশ্য দেখা গিয়েছে বলে দাবি। যদিও, অমরনাথবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ছাতা দিয়েছি রক্তদাতাদের। কিন্তু এটাকে উপহার হিসেবে দেখাটা ঠিক হবে না। রক্তদাতাদের উৎসাহ দেওয়াটাই এর উদ্দেশ্য।’’
তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, দলের তরফে গত ২৫ ও ২৯ জুলাই আসানসোল শহরে দু’টি রক্তদান শিবির আয়োজিত হয়েছে। দু’টি শিবিরে প্রায় ৪০ জন করে রক্তদান করেছেন। সেখানেই রক্তদাতাদের ছাতা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আয়োজকদের তরফে গুরুদাস চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘রক্তদাতাদের উৎসাহ দিতেই ছাতা দেওয়া হয়েছে।’’ আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের চিকিৎসক সঞ্জিত চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘উপহার দেওয়ার কথা শুনেছি। তীব্র আপত্তি জানিয়েছি।’’
ঘটনাচক্রে, ২০১৮-র ২৫ মে রাজ্যের প্রকাশিত ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রক্তদান শিবিরে রক্তদাতাদের কোনও ভাবেই ‘আর্থিক অথবা অর্থ সম্পৃক্ত কোনও উপহার’ দেওয়া যাবে না। কারণ, ‘রক্তদানকে বিশুদ্ধ ভাবে বিনিময়হীন দান’ বলে ধরা হয়। পাশাপাশি, ওই নির্দেশে এ-ও জানানো হয়েছিল, সরকারি বা বেসরকারি ভাবে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে হলে সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কের দায়িত্ব প্রাপ্ত চিকিৎসকের কাছে আয়োজকেরা শিবিরে উপহার দেওয়া হবে না, এই মর্মে লিখিত সম্মতি দেবেন। ওই দু’টি শিবিরের ক্ষেত্রে এমন ‘সম্মতি’ নেওয়া হয় বলে জানান ব্লাড ব্যাঙ্কের চিকিৎসক সঞ্জিতবাবু। তা হলে কেন ছাতা দেওয়া হল? গুরুদাসবাবুর মন্তব্য, ‘‘ছাতা দেওয়াটাও যে উপহারের মধ্যে পড়ে, তা জানা ছিল না!’’
‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর আসানসোল শাখার সভাপতি শ্যামল সান্যাল সরকারের ওই নির্দেশ অমান্য করা ‘কোনও ভাবেই উচিত নয়’ বলে জানান। ‘পশ্চিমবঙ্গ ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর তরফে দেবাশিস চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘রক্তদান শিবিরে উপহার দেওয়া যাবে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে তথ্য-সহ অভিযোগ জানাব।’’