Bonedi Barir Durga Puja

ভাটা পড়েছে নানা রেওয়াজে, তবু কমেনি আকর্ষণ

বৈদ্যপুরের নন্দীবাড়িতে এক সময়ে অষ্টমীর সন্ধিপুজোয় বন্দুক থেকে ছোড়া হত গুলি। সে রেওয়াজ ভেঙেছে। এখন সন্ধিপুজো বসে তিনটি পটকার আওয়াজে।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:৫৭
Share:

সাহা বাড়ির পুজো।

জৌলুস কমেছে। নানা রেওয়াজ বন্ধ হয়েছে। তবে পুজোর আকর্ষণ কমেনি নানা বাড়ির পুজো। তেমনই দু’টি পুজো কালনা ২ ব্লকের বৈদ্যপুরের নন্দী বাড়ি ও পূর্বস্থলী ২ ব্লকের পাটুলির সাহা বাড়ির পুজো।

Advertisement

পাটুলির সাহা বাড়িতে পুজোর আগে দেবীর মন্দির ও আশপাশ সেজে উঠত ঝাড়বাতিতে। শোভাযাত্রা করে ভাগীরথী থেকে জল ভরে আনা হত দেবীর ঘটে। পুজোয় ব্যবহার করা হত রূপো ও তামার ঘট। পুজোয় পাত পড়ত বহু মানুষের। এখন জাঁকজমক কমলেও, পুরনো নিয়মেই হয় পুজো।

কারুকাজে ভরা মন্দিরে পুজোর আগে পড়েছে রঙের পোঁচ। পরিবারের সদস্যদের দাবি, প্রায় ২০০ বছর আগে চারুচন্দ্র সাহা পুজো শুরু করেন। পুজো শুরুর আগে নবপত্রিকা স্নান করানো হয় ভাগীরথীতে। অষ্টমীর সন্ধিপুজোর সময় থেকে শুরু হয় সিঁদুর খেলা। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগ দেন প্রতিবেশীরাও। নবমীতে হয় কুমারীপুজো ও হোম। চালকুমড়ো, আখ এবং কলা বলি হয়। অতীতে দু’টি নৌকা একত্র করে দেবী প্রতিমাকে কয়েক পাক ভাগীরথীতে ঘোরানো হত বিসর্জনের আগে। পরিবারের সদস্য সুব্রত সাহা বলেন, ‘‘এখন বিসর্জনের সময়ে একটি নৌকা ব্যবহার করা হয়। প্রাচীন রীতিনীতি মেনেই পুজো হয়।’’ প্রবীণ সদস্য সুবোধ সাহার বক্তব্য, ‘‘বাড়ির সদস্যদের চাঁদাতেই হয় পুজো। তবে পারিবারিক সঙ্গতি আগের মতো নেই। ফলে, জৌলুস কমেছে পুজোর।’’

Advertisement

বৈদ্যপুরের নন্দীবাড়িতে এক সময়ে অষ্টমীর সন্ধিপুজোয় বন্দুক থেকে ছোড়া হত গুলি। সে রেওয়াজ ভেঙেছে। এখন সন্ধিপুজো বসে তিনটি পটকার আওয়াজে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোর প্রতিষ্ঠাতা শিশুরাম নন্দী। জনশ্রুতি, প্রথমে আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না শিশুরামের। মেমারি থেকে বৈদ্যপুর এসে তিনি শুরু করেন ছোলা, গুড়, মুড়কির ব্যবসা। ধীরে-ধীরে প্রচুর ভূসম্পত্তির মালিক হন। ১৬৮০ খ্রীষ্টাব্দে শিশুরাম শুরু করেন দুর্গাপুজো। প্রাচীন নিয়ম মেনে ৭ ফুটের একচালার প্রতিমা গড়া হয়। আখ, কুমড়ো ও কলা বলি দেওয়া হয়। নিয়ম মেনে পারিবারিক পুকুরে বিসর্জন হয়। বিসর্জনের আগে প্রায় ২৫ জনের একটি দল প্রতিমা কাঁধে নিয়ে এলাকা ঘোরেন।

দেবীর ভোগে দেওয়া হয় লুচি ,মাছ ও নানা তরকারি। পুজোয় আগে বহু মানুষকে নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো হত। পরিবারের সদস্যেরা জানান, ১২ আগে সে রেওয়াজ ভেঙেছে। এক সময়ে দেবীর বিসর্জনে জ্বালানো হত দেবক (মাটির মালসায় ঘুঁটে ও তেল দিয়ে জ্বালানো আলো)। এখন তার পরিবর্তে জ্বলে রংমশাল। তবে রেওয়াজ মেনে এখনও দশমীর দিন এলাকায় বিলি করা হয় জিলিপি। পরিবারের তরফে মানস নন্দী বলেন, ‘‘পরিবারের শরিক ২১০ জন। পুজোয় হাজির থাকেন অনেকেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement