লাইনে ঘেঁষাঘেঁষি। নিজস্ব চিত্র
‘মাস্ক’, স্যানিটাইজ়ার নিয়ে কড়াকড়ি ছিল। কিন্তু খাতা জমা, স্ক্রুটিনি-সহ নানা কাজে এসে শিক্ষকদের দূরত্ববিধি না মানার অভিযোগ উঠেছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। সোমবার গা ঘেঁষাঘেঁষি করে অনেক শিক্ষককে লাইনে দাঁড়াতে দেখা যায়। অনেকে দল বেঁধে মেডিক্যাল কলেজের কাছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মীয়মাণ ভবন ঘুরে দেখেন। ওই ভবনের ভিতর থেকেই স্নাতক স্তরের তৃতীয় ও পঞ্চম সিমেস্টারের পাস কোর্সের খাতা বিলি হয়। আবার দূরত্ববিধি না মেনে অনার্সের খাতা স্ক্রুটিনিও করা হয়েছে বলে শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন দু’শোরও বেশি শিক্ষক এক সঙ্গে হাজির হয়েছিলেন। মহকুমা প্রশাসনের (বর্ধমান সদর) দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও অনুমতি নেয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য আশিস পানিগ্রাহী অবশ্য দাবি করেন, “একটা সময় কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। পরে, বড় ঘরে একটি টেবিল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাতা বিলি করা হয়। খাতা দেখা, স্ক্রুটিনির কাজও ওই ভাবে হয়েছে।’’ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শিক্ষকেরা দূরত্ববিধি মানছেন না, অভিযোগ পেয়ে নির্মীয়মাণ ভবনে যান উপাচার্য নিমাই সাহা, সহ-উপাচার্য, কলেজ সমূহের পরিদর্শক (আইসি) সুজিত চৌধুরীরা। পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়। ‘মাস্ক’ ছাড়া, কোনও শিক্ষককে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি। ভবনের মুখে ‘থার্মাল গান’ দিয়ে প্রত্যেকের পরীক্ষা করা হয়। আধ ঘণ্টা অন্তর ‘স্যানিটাইজ়’ করা হয়।
তবে খাতা নিতে আসা বেশ কয়েকজন কলেজ শিক্ষকের ক্ষোভ, “রবিবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ কর্তাদের আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলাম। বলেছিলাম, দুশো-আড়াইশো জন শিক্ষক এক সঙ্গে খাতা নিতে বা দেখতে হাজির হলে দূরত্ববিধি থাকবে না। সেটাই হল!”
জুলাই মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকস্তরের সব পর্যায়ের ফল বার করার নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ফল বার করা দূর, পরীক্ষকদের কাছে খাতা পৌঁছয়নি। এ দিন স্নাতক স্তরের পাস কোর্সে ওই দুটি সিমেস্টারে ৫০০ বান্ডিল (প্রতি বান্ডিলে ৪০ থেকে ১০০টির মত খাতা থাকে) মতো খাতা বিলি করা হয়। এই সপ্তাহের মধ্যে খাতা দেখে জমা দিতে বলা হয়েছে। সহ-উপাচার্য বলেন, “চলতি মাসের মধ্যে ফল বার করার আপ্রাণ চেষ্টা করব।’’