ফাইল চিত্র।
বৈধ বালির খাদান থেকে ‘নিয়ম বহির্ভূত’ ভাবে বালি তোলা হচ্ছে, পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা মঙ্গলকোটের তৃণমূল বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। দলের একাংশ ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করছে, দলেরই লোকজনকে ‘ভুয়ো মামলা’য় ফাঁসানো হচ্ছে বলেও মঙ্গলবার দুপুরে অভিযোগ করেন তিনি। সেই সঙ্গে এ দিন তিনি দাবি করেন, কারও ‘অনুগত’ হয়ে চলতে পারবেন না। তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি তথা মঙ্গলকোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অনুব্রত মণ্ডল এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি।
মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা এ দিন প্রথমে জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, তার পরে জেলাশাসক এনাউর রহমানের সঙ্গে দেখা করেন। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘মঙ্গলকোটে ২২টি বালি খাদান রয়েছে। বৈধ খাদান থেকে অবৈধ উপায়ে বালি তোলা হচ্ছে। একটি চালানে অনেক বালির গাড়ি যাচ্ছে। অথবা, একটি বৈধ ঘাটের সঙ্গে অনেকটা এলাকা নিয়ে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বালি তোলা হচ্ছে। এক চালানে অন্য খাদান থেকেও বালি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মঙ্গলকোটের মানুষ বিভিন্ন ভাবে অভিযোগ করছেন। এ ভাবে বালি তোলায় রাজস্ব ফাঁকি পড়ছে।’’ মন্ত্রী জানান, পুলিশ এবং ভূমি সংস্কার দফতর বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছে।
এ ছাড়া এ দিন মন্ত্রী জেলাশাসকের কাছে বিধায়ক তহবিলের উন্নয়নের কাজ ‘আটকে’ যাচ্ছে বলে দাবি করেন। মন্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘গিধগ্রাম, ভাল্যগ্রাম ও আর একটি পঞ্চায়েতে ২০১৭ সালে অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হয়েছিল। সেগুলির পরিষেবা মানুষ পাচ্ছেন না। ওই অ্যাম্বুল্যান্সগুলি তুলে সরকারি সংস্থাকে দেওয়া হোক। এ ছাড়া, কাজ করতে গেলে নানা ভাবে বাধা তৈরি করা হচ্ছে।’’ জেলাশাসক বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
এ দিন সিদ্দিকুল্লা অভিযোগ করেন, ‘‘দলের একাংশ ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। দলেরই অনেক কর্মীকে মিথ্যা অভিযোগে, গাঁজা পাচারে জড়িয়ে জেল খাটানো হচ্ছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, তাঁরা ওই সব ঘটনায় জড়িত নন। অনেককে গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। বিষয়টি পুলিশকে দেখার জন্য বলেছি। একটি নামের তালিকাও পুলিশ সুপারকে দেওয়া হয়েছে।’’ কারা ক্ষমতার ‘অপব্যবহার’ করছেন, সে প্রশ্নে মন্ত্রীর জবাব, ‘‘মঙ্গলকোটে শাসক দলের একটি অংশ। তাঁদের বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত। বড় মাথাকে ধাক্কা দিতে পারছেন না বলে অন্য জায়গায় ধাক্কা দিচ্ছেন।’’ তাঁর দাবি, দলীয় নেতৃত্ব তাঁকে মঙ্গলকোটে কর্মসূচি নিতে বলেছেন। কিন্তু কর্মসূচি করলেই অশান্তি হবে। প্রশাসনিক স্তরেই সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন। এর পরেই তাঁর দাবি, ‘‘দল যদি মঙ্গলকোটে আমাকে প্রার্থী করে, তা হলে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। আমি ওঁর অনুগত হয়ে থাকতে পারব না। গত নির্বাচনে উনি কী করেছিলেন, সবাই জানেন। ঝুঁকি নিয়ে হাত পোড়াতে যাব না।’’ ‘ওঁর’ বলতে তিনি অনুব্রতবাবুর দিকে ইঙ্গিত করছেন কি না, সে প্রশ্নে মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘সবই তো বুঝতে পারছেন। দলের নেতা হয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা তো বলতে পারব না।’’
গোটা বিষয়টি নিয়ে অনুব্রতবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ বিষয়ে আমি উৎসাহী নই। তাই কিছু বলব না।’’