সিটি সেন্টারে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।
ধানবাদ থেকে অন্ডালের কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দর হয়ে দিল্লি ফিরছিলেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। রবিবার রাতে তাঁর সঙ্গে বিমানবন্দরে সৌজন্য-সাক্ষাৎ করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। যাওয়ার পথে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে চা পান করেন রাজ্যপাল। কথা বলেন স্থানীয় ফল বিক্রেতাদের সঙ্গে। ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও, সোমবার বিষয়টি নিয়ে চর্চা করছেন এলাকার বিক্রেতারা।
রবিবার সন্ধ্যায় কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরের দিকে যাওয়ার সময়ে, হঠাৎ সিটি সেন্টারে রাজ্যপালের কনভয়ের অভিমুখ ঘুরে যায় আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) কার্যালয়ের দিকে। সেখানে রাস্তার ধারে কয়েক জন ফল বিক্রেতা নিয়মিত ফল বিক্রি করেন। রয়েছে একাধিক চায়ের দোকান। আচমকা কার্যত এলাকার দখল নেন রাজ্যপালের নিরাপত্তারক্ষীরা। গাড়ি থেকে নেমে আসেন রাজ্যপাল। আশপাশের সবাই তখন খানিকটা বিস্মিত হয়ে যান। চর্চা শুরু হয়, রাজ্যপাল হঠাৎ এখানে কেন, তা নিয়ে। এ দিকে, রাজ্যপাল গাড়ি থেকে সটান নেমে এসে এক-এক করে কথা বলতে শুরু করেন ফল বিক্রেতাদের সঙ্গে।
ফল বিক্রেতা সঞ্জীব দাস সোমবার বলেন, “রাজ্যপাল কত দিন ধরে দোকান চালাচ্ছি, ফলের বাজারদর, ফল কোথা থেকে আসে, দৈনিক রোজগার কেমন, বাড়িতে কে কে আছেন— এ সব খোঁজ নেন। আমাকে মিষ্টিও খাইয়েছেন। আমি প্রণাম করি।” ফল বিক্রেতা বাবুলচন্দ্র দাস বলেন, “পাশের দোকানে রাজ্যপালকে দেখে আমি এগিয়ে গেলাম। কিন্তু তখন খুব ভিড় হয়ে গিয়েছিল। ঢুকতে পারিনি। তবে রাজ্যপাল এর পরে আমাদের সবার দোকানেই এসে কথা বলেন। খোঁজখবর নেন।” ফল বিক্রেতা রূপম দাস জানান, রাজ্যপালের ব্যবহার তাঁর খুব ভাল লেগেছে।
এর পরে, রাজ্যপাল যান চা বিক্রেতা অজিত দাসের দোকানে। সেখানে দোকানদার চিনি ছাড়া চা দেবেন বলে ভেবেছিলেন। কিন্তু রাজ্যপাল চিনি দেওয়া চা চেয়ে নেন। অজিত জানান, তাঁর তৈরি চায়ের প্রশংসা করে একশো টাকা হাতে ধরিয়ে দেন। তবে, সুযোগ বুঝে তিনি বার বার উচ্ছেদ-যন্ত্রণার কথাও জানিয়েছেন বলে জানান অজিত। অজিতের দাবি, “উনি আশ্বাস দিয়েছেন। এত পুলিশ দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, আবার না ভাঙাভাঙি হয়। তবে, রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা হওয়ার পরে, ভয় ভাঙে।”