প্রতীকী ছবি।
করোনা-পরিস্থিতিতে স্কুলগুলিতে অনলাইনে পঠন-পাঠন চলেছে এতদিন। ক্লাস টেস্ট নেওয়া হয়েছে অনলাইনেই। তবে অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা অফলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্গাপুরের বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলি। সে জন্য পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি উত্তরপত্র পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে কোনও কোনও স্কুল। তবে এ ক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র যাবে পরীক্ষার ঠিক আগে অনলাইনে। আবার কোনও স্কুল পরীক্ষা শুরুর আগে, পড়ুয়ার বাড়িতে প্রশ্নপত্র পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছে।
বিভিন্ন স্কুলের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, বিষয়ভিত্তিক পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুলগুলি। সে জন্য প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতির মতোই প্রতিটি বিষয়ের আলাদা আলাদা প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়েছে। কিছু স্কুল পড়ুয়াদের বাড়ি-বাড়ি উত্তরপত্র ও প্রতিটি বিষয়ের জন্য আলাদা আলাদা খাম পৌঁছে দিচ্ছে। কোন বিষয়ের কত নম্বরের পরীক্ষা এবং কতক্ষণ সময় ধরে পরীক্ষা হবে তা আগেই অনলাইনে নোটিস পাঠিয়ে পড়ুয়াদের জানিয়ে দিয়েছে স্কুলগুলি। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, সাধারণত ৩০-৫০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে।
পরীক্ষার দিন পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ আগে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পড়ুয়াদের কাছে প্রশ্নপত্র পৌঁছে যাবে। পরীক্ষা শুরুর ঠিক পাঁচ মিনিট আগে পৌঁছে যাবে পাসওয়ার্ড। সেই পাসওয়ার্ড দিয়ে তবেই প্রশ্নপত্র খুলবে। এর পরে নির্দিষ্ট সময় ধরে উত্তর লিখবে পড়ুয়ারা। সেই সময় একজন অভিভাবক ইনভিজিলেটরের দায়িত্ব পালন করবেন। উত্তরপত্রে ইনভিজিলেটরের জন্য নির্দিষ্ট অংশে তাঁকে সই করতে হবে। এর পরে সেই উত্তরপত্র স্কুল থেকে সরবরাহ করা নির্দিষ্ট খামে ভরে স্কুলে পাঠিয়ে দিতে হবে।
দুর্গাপুরের কমলপুরের সিবিএসই অনুমোদিত একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অধ্যক্ষ সুব্রত চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, শহরের বিভিন্ন জায়গায় উত্তরপত্র সংগ্রহ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার পরে এক ঘণ্টার মধ্যে নিজের এলাকার কোনও কেন্দ্রে খামে ভরা উত্তরপত্র পৌঁছে দেবেন পড়ুয়ার অভিভাবক। দুর্গাপুরের বাইরে থাকা পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে উত্তরপত্র স্পিড পোস্টে, কুরিয়ারে বা স্ক্যান করে পাঠানো যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘কোনও ভাবেই যেন কোথাও অযথা ভিড় না হয়, তা নিশ্চিত করা হয়েছে। স্কুলকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু স্বাস্থ্য-বিধি নিয়ে অযথা ঝুঁকি এড়ানো যাচ্ছে।’’
কিছু স্কুল আবার খামে ভরে একই সঙ্গে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র পৌঁছে দিচ্ছে পড়ুয়াদের বাড়িতে। যে দিন যে বিষয়ের পরীক্ষা, সে দিন নির্দিষ্ট সময়ে অভিভাবক খাম খুলে প্রশ্নপত্র বের করে পড়ুয়ার হাতে দেবেন। পরীক্ষা শেষ হলে উত্তরপত্র খামে ভরে রেখে দেবেন। সব পরীক্ষা শেষ হলে অভিভাবক নিজে স্কুলে গিয়ে সব উত্তরপত্র দিয়ে আসবেন। যেমন, দুর্গাপুরের ডিএসপি হাসপাতাল সংলগ্ন মধ্যশিক্ষা পর্ষদ অনুমোদিত ইংরেজি মাধ্যম উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে এ ভাবেই পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্কুলের সম্পাদক সুশান্ত পোদ্দার বলেন, ‘‘পড়ুয়ারা কতটা পড়াশোনা করেছে তার মূল্যায়ন জরুরি। তা না হলে কোথায় খামতি থাকছে তা জানা যাবে না। তাই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের বাড়িতে প্রশ্নপত্র পাঠিয়ে পরীক্ষা নিতে হচ্ছে।’’
স্কুলগুলির এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অভিভাবকেরা।