এখানেই হবে বাস-হাব (বাঁ দিকে)। প্রস্তাবিত প্রকল্প (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।
যাত্রীদের বেশি সুবিধা দিতে ‘বাস হল্ট হাব’ তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে দক্ষিণবঙ্গ রাস্ট্রীয় পরিবহণ নিগম বা এসবিএসটিসি। জানা গিয়েছে, উন্নত মানের পার্কিং ব্যবস্থা, শৌচাগার, বিশ্রামের জায়গা, রেস্তরাঁ থেকে শুরু করে স্থানীয় মহিলাদের তৈরি হস্তশিল্পের দোকান থাকবে সেখানে। জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা, ওষুধেরও ব্যবস্থা রাখা হবে। অনেকটা বিমানবন্দরের ধাঁচে আহার-বিশ্রামের পরিকাঠামো গড়ে উঠবে। আজ, সোমবার দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের পালসিট টোলপ্লাজার কাছে ‘পিপিপি মডেলে’ ওই ‘বাস হল্ট হাবে’র শিলান্যাস করা হবে। মঙ্গলকোটেও বাদশাহী রোডের উপর এ রকমই একটি হাব গড়ে উঠছে বলে এসবিএসটিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এসবিএসটিসির চেয়ারম্যান দীপ্তাংশু চৌধুরি বলেন, “লম্বা বাসযাত্রায় যাত্রীদের মধ্যে ক্লান্তি আসে। বিমানবন্দরের ধাঁচে গড়ে তোলা এই সব হাব আরাম দেবে তাঁদের।’’
নিগম সূত্রে জানা যায়, ‘পিপিপি’ মডেলে গড়ে ওঠা এই হাবগুলির পরিকাঠামো বেসরকারি সংস্থার হাতে। কোন কোন জায়গায় যাত্রী সুবিধার্থে কী কী পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে সেটাও ওই সংস্থা ঠিক করছে। ইতিমধ্যে মঙ্গলকোটে আধ একর জমির উপর গড়ে উঠছে হাব। তার কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। নিগমের অধিকর্তা গোদালা কিরণকুমার বলেন, “আশা করছি, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস থেকে মঙ্গলকোটের হাবটি চালু করা সম্ভব হবে।’’ পালসিটে দু’একর জায়গার উপর হাবটি তৈরি করা হচ্ছে। নিগমের ওই অধিকর্তার দাবি, “পালসিটের হাবটিও আমরা জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে চালু করতে চাইছি। তবে এই হাবে যাত্রী সুবিধার্থে অনেক রকমের কাজ হবে। সে জন্য প্রকল্পটি শেষ হতে বছর খানেক লাগতে পারে।’’
চুক্তি অনুযায়ী হাবের পরিকাঠামো গড়ে তোলা সংস্থা নিগমকে প্রতি বছর তিন লক্ষ টাকা করে আপাতত দেবে। ব্যবসা বাড়লে চুক্তির পরিমাণও বাড়বে বলে এসবিএসটিসির তরফে জানানো হয়েছে। প্রতিটি জায়গায় বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে ৩০ বছরের চুক্তি হয়েছে এসবিএসটিসির। প্রতিটি হাবে দেড়শো থেকে দু’শো জনের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। নিগম সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় দূরপাল্লার বাসের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু দীর্ঘ বাসযাত্রার ধকল সইতে না পারায় এবং যাত্রাপথে উন্নত মানের শৌচাগার, খাবার ও পানীয় জলের অভাবে একাংশ বাস পরিষেবা এড়িয়ে চলেন। করোনা আবহে অনেক যাত্রী বাড়তি টাকা খরচ করে গাড়িতে সফর করছেন। এই পরিস্থিতি বদলাতে এবং সব ধরনের যাত্রীকে বাসযাত্রায় আকৃষ্ট করতে বিশেষ হাব তৈরির কথা ভাবা হয়েছে। বাসের চালক-কর্মীদের জন্য বিশ্রামের পৃথক ব্যবস্থা ছাড়াও থাকবে বাস ও গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের বন্দোবস্ত। যাবতীয় পরিষেবার উপরে বিশেষ নজর রাখবে এসবিএসটিসি।