সায়নী ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
২০২৪-এর লোকসভা ভোটেও ‘খেলা হবে’। রবিবার পাণ্ডবেশ্বরে এসে এমন মন্তব্য করলেন যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। সায়নীর এই মন্তব্যের পরেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিরোধীরা। তবে সে সবে আমল না দিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, আদতে লোকসভা ভোটে দলের লড়াই এবং ভাল ফলের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন সায়নী। সেই সঙ্গে সংগঠনে জোর দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন সায়নী।
এ দিন সায়নী পাণ্ডবেশ্বরের সুভাষ কলোনি রক্তকরবী মঞ্চ থেকে বলেন, ‘‘২০২১-এ (বিধানসভা ভোটে) আমরা দারুণ খেলেছি। ২০২৪-এ (লোকসভা ভোটে) আরও ভাল খেলব। সুট-বুট নয়, দিল্লি পৌঁছবে বাংলার হাওয়াই চটি।’’ পরে, বারাবনির লালগঞ্জ হাটে তৃণমূলের একটি জনসভাতেও সায়নী বলেন, ‘‘আমাদের আগামী দিনের লক্ষ্য, ২০২৪-এর লোকসভা ভোট।’’ পাশাপাশি, বিজেপির বিরুদ্ধে গত বিধানসভা ভোটে কুৎসা, অপপ্রচার, ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগও করেন তিনি। এ দিকে, সায়নী বিশেষ ভাবে জোর দেন তাঁদের সংগঠনকে মজবুত করার দিকেও। তিনি বলেন, ‘‘যুব তৃণমূলের সংগঠনকে মজবুত করার লক্ষ্যে রাজ্য জুড়ে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। পশ্চিম বর্ধমান জেলা থেকেই তার সূচনা হল।’’
তৃণমূলের ওই কর্মসূচি উপলক্ষে বারাবনিতে ছিলেন বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়, পাণ্ডবেশ্বরে ছিলেন বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক, তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন প্রমুখ।
তবে, সায়নীর ২০২৪-র ভোটে ‘খেলা’র স্লোগানটিকে সামনে রেখে তৃণমূলকে বিঁধেছে বিজেপি। বিজেপির আসানসোল জেলার আহ্বায়ক শিবরাম বর্মণ বলেন, ‘‘খেলা মানে ক্রিকেট, ফুটবলের কথা বুঝি আমরা। তৃণমূল খেলা শব্দটিরই অবমাননা করছে। তৃণমূলের খেলা মানে, মারধর, লুটপাট, গুন্ডাগিরি।’’ একই অভিযোগ করে সিপিএম নেতা মনোজ দত্তের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আসানসোল ও দুর্গাপুরে গত পুর-ভোটে তৃণমূল প্রমাণ করেছে, ওদের খেলা মানে, ভোট লুট।’’ যদিও, বিরোধীদের এ সব মন্তব্যে আমল দিতে চায়নি তৃণমূল। ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘খেলা হবে বলতে আমরা বুঝি, গণতান্ত্রিক উপায়ে রাজনীতির খেলা। লোকসভা হোক বা পুরসভা, সব ভোটেই আমরা ভাল খেলব অর্থাৎ জিতব। এটাই বলতে
চেয়েছেন সায়নী।’’
এ দিকে, পাণ্ডবেশ্বর যাওয়ার পথে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে পিয়ালা কালীবাড়ির কাছে কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন সায়নী। এর জেরে সড়কের একাংশে যানজট হয় বলে স্থানীয় সূত্রে দাবি। বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায়সরকারদের অভিযোগ, ‘‘এক জন নেত্রী আসবেন বলে অ্যাম্বুল্যান্স আটকে গিয়েছিল বলে শুনেছি। পাশাপাশি, তৃণমূল কর্মীরা হেলমেট না পরে মিছিল করেছেন।’’ পুলিশ সায়নীর কনভয় বেরিয়ে গেলে সেটিকে যাতায়াতের পথ করে দেয় বলে জানান বিরোধীরা। বিরোধীদের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের কাঁকসা ব্লক সভাপতি দেবদাস বক্সী, যুব তৃণমূল নেতা মনোজ চাঁদেরা।