চলছে নতুন কালভার্ট তৈরির কাজ। নিজস্ব চিত্র
মাসখানেক আগে মাটি আলগা হয়ে রানিগঞ্জে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশ বসে গিয়েছিল। সেই এলাকায় নতুন কালভার্ট তৈরি করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। সে জন্য রাস্তার অর্ধেক বন্ধ রাখা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যানজটের জেরে নাকাল হচ্ছেন বাসিন্দারা। সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা, অভিযোগ বণিক সংগঠনের।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের ৮ অগস্ট ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের রানিগঞ্জ শিশুবাগান মোড় লাগোয়া এলাকায় সড়কের একাংশ বসে যায়। ওই জায়গাতেই এর আগে ৯ ও ১৩ জুন একই বিপত্তি ঘটেছিল। ৮ অগস্টের ঘটনার পরে ওই রাস্তার তলায় থাকা পুরনো ‘আর্চ ব্রিজ’-টি বুজিয়ে দিয়ে পাশেই নতুন কালভার্ট তৈরির কাজ শুরু করেছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।
এ দিকে, এই কাজের জন্য ওই এলাকায় রাস্তাটির অর্ধেক বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু এর ফলে তৈরি হয়েছে ‘পথ-জটিলতা’, দাবি ব্যবসায়ীদের। তাঁরা জানান, প্রশাসন প্রথমে রাত ১০টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত রনাই হয়ে পণ্যবাহী যান চলাচলের অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু সেখানে পরপর দু’টি দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হওয়ায় এলাকাবাসীর দাবি মেনে, সেই রাস্তায় ভারী যান চলাচল বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। এর বিকল্প হিসেবে, রানিসায়র বাইপাসের মাঝামাঝি এলাকায় রেল টানেল দিয়ে যাতায়াত করা যায়। কিন্তু সেটির রাস্তা বেহাল হওয়ায় বাইরে থাকা রানিগঞ্জে জিনিসপত্র কিনতে আসা ব্যবসায়ীরা ওই রাস্তাটি ব্যবহার করতে চাইছেন না।
এই পরিস্থিতিতে রানিগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, বাইরের ব্যবসায়ীদের গাড়িগুলি রানিগঞ্জে না এসে আসানসোল, নিয়ামতপুর চলে যাচ্ছে। ‘রানিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স’-এর সভাপতি সন্দীপ ভালোটিয়া জানান, দক্ষিণবঙ্গে রানিগঞ্জ চাল, আলু, ডাল, তেল, ময়দা, আটা-সহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সব থেকে বড় পাইকারি বাজার। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম এবং পশ্চিম বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকার ব্যবসায়ীরা রানিগঞ্জ থেকেই এ সব সামগ্রী কিনে নিয়ে যান। সন্দীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘বাইরের ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্র কিনতে রানিগঞ্জে গাড়ি পাঠাতে চাইছেন না। এর জেরে শহরের ব্যবসায়ীরা পুজোর মুখে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন।’’ তবে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রলয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ব্যস্ত সড়কে তাড়াতাড়ি কাজ করা যাচ্ছে না। তাই অতিরিক্ত সময় লাগছে। দুর্গাপুজোর আগে অর্ধেক অংশের কাজ শেষ করে দু’দিকে যান চলাচল চালু করা হবে। দুর্গাপুজোর কয়েক দিন পরে আবার রাস্তার বাকি অর্ধেক অংশে কালভার্ট তৈরির কাজ শুরু হবে। সব মিলিয়ে আরও মাস দু’য়েক সময় লাগবে।’’
এ দিকে, রানিগঞ্জ ট্র্যাফিক থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্কার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের চাপ কমাতে বাঁকুড়া পুলিশ মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া থেকে আসা সমস্থ ভারী যানবাহনগুলিকে পুরুলিয়া ও দুর্গাপুর হয়ে গন্তব্যে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ থেকে আসা ভারী যানবাহনগুলি রানিসায়র বাইপাস হয়ে বাঁকুড়া, মেদিনীপুর-সহ নানা এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। তাতে যানজটের চাপ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকছে বলে ট্র্যাফিক পুলিশের দাবি।