Paddy

প্রবল ঠান্ডায় ক্ষতির আশঙ্কা ধান চাষে

শীত যত বেড়েছে ততই গরম পোশাকের দোকানগুলিতেও ভিড় বেড়েছে। এ দিন আসানসোলের টিবেটান বাজারে গিয়ে দেখা গিয়েছে ক্রেতাদের থিকথিকে ভিড়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল ও কাঁকসা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:০৭
Share:

জমিতে ছড়ানো হয়েছে ছাই। কাঁকসায় সোমবার। নিজস্ব চিত্র

আর কয়েকদিন পরেই বড়দিন। তার আগেই জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ায় উৎসবের আনন্দ আরও বেড়েছে। পিকনিক স্পট ও জেলার দর্শনীয় স্থানগুলিতে মানুষজনের ভিড় দেখে অন্তত তেমনটাই মনে হচ্ছে। তবে এই শীতে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন জেলার ধান চাষিরা।

Advertisement

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ আসানসোল শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ঘোরাফেরা করেছে। এ দিন পানাগড়ের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল বলে সন্ধ্যায় আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত জেলায় শীতলতম দিন ছিল সোমবার। এ দিন কুয়াশা একেবারেই ছিল না। সূর্যাস্তের কিছু পরেই বিভিন্ন এলাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোয়াতে দেখা গিয়েছে মানুষজনকে। রাত ৮টার পরে, আসানসোলের মূল বাজারও প্রায় শুনশান হয়ে পড়েছে।

শীত যত বেড়েছে ততই গরম পোশাকের দোকানগুলিতেও ভিড় বেড়েছে। এ দিন আসানসোলের টিবেটান বাজারে গিয়ে দেখা গিয়েছে ক্রেতাদের থিকথিকে ভিড়। নভেম্বরের শুরুতে বসে গিয়েছে এই অস্থায়ী বাজার। এক মাস কেনাবেচা হয়েছে। কিন্তু সোমবার সবচেয়ে বেশি মানুষের ঢল নেমেছে বলে জানালেন বিক্রেতারা। এক বিক্রেতা সবিতা প্রধান বলেন, ‘‘ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের সংখ্যাও বাড়ছে।’’

Advertisement

এ দিকে হঠাৎ করে তীব্র ঠান্ডায় ধানের বীজতলার ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করছেন চাষিরা। বিশেষ করে কাঁকসা এলাকায়। কারণ, গত দুদিন ধরে তাপমাত্রা কমেই চলেছে এলাকায়। এই অবস্থায় বীজ কতটা সুরক্ষিত থাকবে তা নিয়ে চিন্তিত চাষিরা। রবিবার পানাগড়ের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গিয়েছিল। সোমবারও সকাল থেকে বেশ ঠান্ডা অনুভব করছেন বাসিন্দারা। কাঁকসার দোমড়ার চাষি তাপস মাজি, দেবু ঘোষেরা বলেন, ‘‘যা ঠান্ডা পড়েছে, তাতে বীজতলার কী হবে বুঝতে পারছি না!’’ কৃষি দফতরও জানিয়েছে, ঠান্ডায় বীজের ক্ষতি হতে পারে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রবল ঠান্ডায় বীজের বাড় অনেকটাই কমে যায়। চারার পাতা লালচে হয়ে যায়। গাছ বসেও যায় অনেক সময়ে। পাশাপাশি, কুয়াশার কারণে বীজে রোগপোকার আক্রমণ হতে পারে, যেমন ঝলসা।

কৃষি দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রতিদিন এ রকম আবহাওয়া চলতে থাকলে বীজতলায় সন্ধ্যার সময়ে জল ভরে তা সকালে বের করে দিতে হবে। বীজতলার উপরে ছাই ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। যাতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এ ছাড়া, জলে দ্রবীভূত হয় এমন যৌগিক রাসায়নিক সার, অণুখাদ্য স্প্রে করা যেতে পারে। কাঁকসা ব্লক সহ-কৃষি অধিকর্তা অনির্বাণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘এই ঠান্ডায় বীজতলায় বেশি করে নজর দিতে হবে। কোনও সমস্যা দেখা দিলে, দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ

করতে হবে।’’

তবে এই ঠান্ডায় সর্ষে চাষ খুবই উপকারী। গম রোপণের ক্ষেত্রেও এই আবহাওয়া সহায়ক বলে কৃষি দফতরের তরফে জানানো হয়েছে। কিন্তু কুয়াশা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন আধিকারিকেরা। কারণ, ঠান্ডার সঙ্গে কুয়াশা যোগ হলে গাছের অঙ্কুর বেরোতে দেরি হবে। সালানপুর ব্লক কৃষি দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই আবহাওয়া মাশরুম চাষের জন্য খুবই উপকারী। তাই সালানপুর ব্লকের প্রায় ২৫টি এলাকায় মাশরুম চাষে গতি আনা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement